স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল সদর উপজেলার লস্করপুর গ্রামে নিখোঁজের ১২ ঘণ্টা পর ডোবা থেকে আরাফ নামে দুই মাসের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত (২৭ নভেম্বর) সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই শিশুর বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মৃত শিশু সন্তানের বাবা মোঃ মিলন মোল্যা বাদী হয়ে গত ২৯ নভেম্বর নড়াইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) নিজ শিশু সন্তান হত্যার দায়ে নিজ মা মোসাঃ মৌসুমী খানমকে (২৪) গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শিশু আরাপ জন্মের পর থেকেই তার শ্বাসনালী ছোট হওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতো এবং দুধ খেতে গেলে বুকে দুধ বাঁধতো। মাঝেমাঝে বমিও করে দিতো। বাচ্চাটির অনেক ঠান্ডা জনিত সমস্যাও ছিল। যে কারণে তাকে সবসময় চিকিৎসকের চিকিৎসার মধ্যে রাখা হতো। ঘটনার দিন শিশু আরাপ তার মায়ের বুকের দুধ খাওয়ার সময় হঠাৎ তার মুখ হা হয়ে যায়, শিশু টি চোখ বড় বড় করে তাকায় এবং কিছুক্ষণ পর তার শরীর নীল হয়ে যায়। তখন আরাপের মা মৌসুমী ভেবেছিল তার বুকে মনে হয় দুধ বাঁধছে।
পুলিশ আরও জানায়, এরপর তিনি তার বাচ্চাকে সোজা করে ঝাকাঝাকি করতে থাকেন। তার মাথায় ফুঁ দেন। কিন্তু শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন তিনি শিশুটির পালস্ চেক করে দেখেন যে,শিশুটি মারা গেছে। শিশু আরাপের মা মোসাঃ মৌসুমী খানম কি করবে বুঝে উঠতে পারেন না। তার স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের কি বলবে এই ভেবে ভয় পেয়ে যায়। তারপর তিনি তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এবং স্বামীর ভয়ে তার মৃত শিশু সন্তানকে রাতের আঁধারে সকলের অগচরে বাড়ির পাশে আলিম মোল্যার মেহগনি বাগানের মধ্যে পুকুরের ভিতর নিজ শিশু সন্তানকে ফেলে রেখে আসেন। এরপর বাড়িতে এসে সবাইকে বলেন যে,তার ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং ঘটনাটি অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জীন- পরী শিশুটিকে নিয়ে গেছে বলে গল্প সাজায়।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন, শিশুকে হত্যার দায়ে তার নিজ মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিকে বুধবার বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।