স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুবলীগ লীগ নেতা ও এক বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন দু’পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন। আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। রোববার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলনকারী, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে এ সংঘর্ষ হয়। গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন নড়াইল শহরের আলাদাতপুর এলাকার বক্কার মোল্যার ছেলে যুবলীগ কর্মী শেখ প্রিন্স (৩৫)। অপর গুলিবিদ্ধ পথচারি সদরের নাকশী গ্রামের কৃষক গোলাম রসুল খান (৭০)।
জানা যায়, রোববার সকাল থেকে নড়াইল-ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের সদর উপজেলার মাদ্রাসা ও মালিবাগ এলাকায় “নড়াইল জেলা ছাত্র জনতার গণমিছিল”-এর ব্যানারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী জমায়েত হতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে তাঁরা শহর সংলগ্ন শেখ রাসেল সেতর পূর্ব পাশের্^ এবং আওয়ামী লীগ,ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সেতুর পশ্চিম পাশের্^ অবস্থান নেয়। এদিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষ সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে দফায় দফায় টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকে। সংঘর্ষ চলাকালে যুবলীগ কর্মী প্রিন্স গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আকাশ ঘোষ রাহুল (২৫), রুপালী বেগম (৫০),সৌরভ রায় (৩৩),মাহমুদুল হাসানসহ (৩৪) কমপক্ষে ২০জন আহত হন।
এদিকে সংঘর্ষ থেমে গেলে বিকেল পৌনে ৩ টার দিকে ২ হাজারের বেশী আন্দোলনকারী মাদ্রাসা বাজার এলাকায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা ৩ পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ খবর পেয়ে তাদের উদ্ধারে অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে পৌছে টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও শর্টগানের গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় নিজ বাড়িতে অবস্থান করা কৃষক গোলাম রসুল খান বুলেটবিদ্ধ হন। তাঁকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। তবে তাঁরা কোথায় চিকিৎসা নিয়েছেন কিংবা ভর্তি হয়েছেন তা জানা যায়নি। শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আহত প্রিন্স ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভূঁইয়া জানান, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে নিষিদ্ধ শিবিরের ক্যাডাররা এ হামলা চালায়। তাদের আঘাতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছে। তারা সংঘর্ষের সময় অর্ধশতাধিক ককটেলের বিষ্ফোরণ ঘটায়। এ সময় সদর থানা পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।
নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী জানান, ছাত্র আন্দোলনের নামে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টাকালে পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রনের জন্য পুলিশ ১৫০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ৬০ রাউন্ড টিয়ারশেলের গুলি বর্ষণ করা হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাতে আমাদের ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।