স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলে করোনা উপসর্গে শওকত আলী (২৫) নামে এক সুপারি ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। সে নড়াইল পৌরসভার দক্ষিণ নড়াইল এলাকার ওমর আলীর পূত্র। মঙ্গলবার (৩১মার্চ) রাতে শওকত নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং এর কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু ঘটে। তবে করোনার উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও মৃতের কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ষ্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বিধায় কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।
মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শওকতের শরীরে এক সপ্তাহ ধরে জ্বর, কাশি, শ্বাসক*ষ্ট, গা ব্যাথা দেখা দেয়। এরপর ঢাকায় করোনাসংক্রান্ত হটলাইনে ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়ভাবে ডাক্তার দেখিয়ে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এর ১৫ মিনিট পরই তার মৃত্যু ঘটে। শওকতের মৃত্যুর পর পরই লা*শ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং রাতেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন মৃতের মা রেবেকা বেগম (৫০) এবং মৃতের ভাই মোহাম্মদ আলী (১৮) প্রায় একই ধরনের উপসর্গে অসুস্থ হয়ে বাড়ি রয়েছেন। সদর হাসপাতালের ডিউটিরত মেডিকেল অফিসার ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, রোগি শ্বাসক*ষ্ট ও বমির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়।
সদর থানার ওসি মোঃ ইলিয়াছ হোসেন জানান, বুধবার সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে বাড়ি লকডাউন করেছে এবং জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাওকে বাড়ির বাইরে না আসতে মাইকিং করা হয়েছে।
এ রোগীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর বলেন, রোগির করোনা নয় তার ষ্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে। তবে নমুনা সংগ্রহের ব্যাপারে সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছিল। পরে কি হয়েছে তা জানিনা।
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মোমেন বলেন, ঢাকা আইইডিসিআর এর প্রতিনিধির সাথে রোগির মৃত্যুর বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে কথা হলে তারা জানিয়েছেন এ রোগি ষ্ট্রোকে মারা গিয়েছে। সেজন্য মৃতের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তবে মৃতের পরিবারকে লকডাউনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন ষ্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ওই এলাকায় বাড়তি সর্তকতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি করোনা প্রতিরোধে আত*ঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন হবার পরামর্শ দেন।
এদিকে শওকতের মৃত্যুর ঘটনা শহরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় গোটা শহরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পেশার মানুষ নানা মন্তব্য করেছেন। তার শরীরে করোনাভাইরাস ছিল কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা না করায় এলাকাবাসী ক্ষু*ব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।