স্টাফ রিপোর্টার
যখন মৃ*ত ব্যক্তির আপনজন ভ*য় ও আ*তংকে লা*শের কাছে যাচ্ছেন না বা যেতে অপারগতা প্রকাশ করছেন এমন কঠিন বাস্তবতায় বৈশ্বিক ম’হামারি করোনাভাইরাসে আক্রা’ন্ত বা করোনা উপসর্গে মৃ*ত্যুবরণ করা ব্যক্তির আ’ত্মীয় স্বজন মৃ*ত ব্যক্তির দা*ফন-কা*ফনের জন্য বঙ্গবন্ধু স্কোয়াডের সদস্যদের খবর দিলে তারা পৌছে যাচ্ছেন মৃ*ত ব্যক্তির বাড়িতে।
গত তিন মাস ধরে ঝুঁ*কি নিয়ে এ স্কোয়াডের সদস্যরা করোনা ও উপসর্গ জেলার বিভিন্ন স্থানে মা*রা যাওয়া ৫টি লা*শের সৎ*কার করেছেন। স্কোয়াডে মুসলিম এবং হিন্দু দু’সম্প্রদায়ের মানুষই রয়েছে। কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই তারা কঠিন এ কাজটি করছেন। এছাড়া এ স্কোয়াডের ৮ জনের একটি টিম প্রতিদিন নড়াইল সদর হাসপাতালে সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ডিউটি করে যাচ্ছেন। মানবিক এসব কর্মসূচির জন্য জনসাধারণের মধ্যে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে এই সংগঠনটি। নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন এ সংগঠনটির আহবায়ক। তিনি সংগঠনটির সার্বিক খোঁজ-খবর রাখছেন।
জানা গেছে, নড়াইলে করোনাভাইরাস মো*কাবিলায় গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি জেলার বিভিন্ন এলাকার ৪শ যুবক নিয়ে গড়ে ওঠে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু স্কোয়াড’। এ সময় থেকে সংগঠনটির সদস্যরা জেলার ২৬টি সিমান্তবর্তী এলাকায় এক এলাকার মানুষকে অন্য এলাকায় প্রবেশে ক*ড়াক*ড়ি এবং স্যানিটাইজ করা, কর্মহীন মানুষকে খাদ্য সহায়তা, জীবা*ণুনা*শক কক্ষ তৈরি এবং নড়াইল সদর হাসপাতাল গেটে হ্যান্ড মাইকে সচেতনতামূলক প্রচার, লোহাগড়া শহর লকডাউন বাস্তবায়ন, রো*গি ও দর্শনার্থীদের তাপমাত্রা মাপা ও তাদের স্যানিটাইজ করাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের কাজ করে যাচ্ছে।
সংগঠন গঠনের শুরুতেই তারা ঘোষণা দিয়েছিল করোনায় আক্রা’ন্ত বা উপসর্গ নিয়ে মৃ*ত্যুবরণ করা কোনো ব্যক্তিকে তারা দা*ফন ও সৎ*কারের ব্যবস্থা করবে। কথা রেখেছে সংগঠনটি। এ পর্যন্ত এ সংগঠনের কর্মীরা ৫জন করোনায় আক্রা’ন্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃ*ত্যু বরণ করা ব্যক্তিকে তারা সমা*হিত করেছে। এর মধ্যে চার জন মুসলমান এবং একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের।
বঙ্গবন্ধু স্কোয়াডের সদস্য সচির অপু খন্দকার বলেন, আমরা কিছু পাওয়ার জন্য নয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করি বিধায় সেই চেতনার জায়গা থেকেই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
বঙ্গবন্ধু স্কোয়াডের প্রধান সমন্বয়কারী জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, করোনা রো*গ মারা*ত্মক ছোঁ*য়াচে হওয়ায় এ রো*গে বা উপসর্গ নিয়ে মা*রা গেলে কেউ তাদের ছুঁ*তে চায় না। তখন আমাদের সদস্যরা পরিবার থেকে বি*চ্ছিন্ন হয়ে অনেক ক্ষেত্রে বিরাগভাজন হয়ে এটিকে নাগরিক দায়িত্ব মনে করে অত্যন্ত ঝুঁ*কিপূর্ণ এ কাজটি করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দা*ফন-কা*ফনের জন্য নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও ব্যক্তির কাছ থেকে সুরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনায় আক্রা’ন্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মৃ*ত্যু বরণ করা একটি দা*ফন-কা*ফন টিম রয়েছে। শুনেছি তাদের জন্য একটি ফান্ডও রয়েছে। কিন্তু তাদের কোনো কর্মকান্ড চোখে পড়ে না। সৎ*কার করতে গেলে টিমের কর্মীদের অ্যা*ম্বুলেন্স, সুরক্ষা সামগ্রী, যাতায়াতসহ আনুসঙ্গিক বিভিন্ন খরচ থাকে। আমাদের এ ফান্ড থেকে বিভিন্ন সহায়তা দিলে আমরা আরও গতি নিয়ে কাজ করতে পারতাম।
স্বা’স্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ পর্যন্ত ১৩জন করোনায় আক্রা’ন্ত হয়ে এবং করোনা উপসর্গে প্রায় ১৫জনের মৃ*ত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা এ প্রতিনিধিকে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্কোয়াডের সদস্যরা নিঃসন্দেহে একটি ভালো কাজ করছে। এ জন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। বঙ্গবন্ধু স্কোয়াডের সদস্যরা জেলা প্রশাসনের কাছে এসে কোনো সহায়তার সুযোগ চাইলে সুযোগ থাকলে অবশ্যই তা আমরা করব।