স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল সদরের নাকসী-মাদ্রাসা বাজার হতে টিসিবির প্রায় ৭৮ কেজি ডাল ও ৫০ কেজি চিনি আটক করেছে জনতা। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের দু’মেম্বর এসব পণ্য অন্যত্র সরাচ্ছিলেন। রোববার (২১আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আগের দিন শনিবার রাত ৮টার দিকে নাকসী-মাদ্রাসা বাজার থেকে ভ্যানে নেয়ার সময় এসব পণ্য আটক করে স্থানীয় লোকজন।
প্রত্যক্ষদর্শী নাকসী গ্রামের মশিয়ার সিকদার বলেন, শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তুহিন নামে এক ভ্যান চালক ভ্যানযোগে বস্তার গায়ে টিসিবি লেখা চিনি ও ডাল নিয়ে যাচ্ছিলো। এ সময় তুহিনকে প্রশ্ন করলে সে জানায় যে, নাকসী বাজারের মুদি দোকানদার জহির শেখ এসব পণ্য নিয়ে যেতে বলেছে।
তবে মুদি দোকানদার জহির জানান, আউড়িয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বর আব্বাস আলী ও ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বর মিজানুর রহমান কিছু চিনি ও ডাল ভ্যানে আনতে বলে। এগুলো টিসিবির পণ্য আমার জানা ছিলো না।
প্রত্যক্ষদর্শী বিপ্লব মোল্যা জানান, আটককৃত টিসিবির পণ্যের মধ্যে ছিলো এক বস্তায় ৫০ কেজি চিনি এবং কয়েকটি প্যাকেটে ৭৮ দশমিক ৭০০ কেজি ডাল। ডাল কেজি হিসেবে প্যাকেট করা থাকলেও কেউ যাতে টিসিবির পণ্য বুঝতে না পারে সে জন্য বেশ কিছু প্যাকেট কেটে বস্তায় ভরে রাখা হয়েছিলো।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত মেম্বর মিজানুর রহমান জানান, টিসিবির পণ্য বিক্রির পর কিছু চিনি ও ডাল ছিলো। সেগুলি অন্যত্র রাখাতে ভ্যানে নেয়া হচ্ছিলো। প্যাকেটগুলি কাটার ব্যাপারে বলেন, কিছু প্যাকেট ছেড়া ছিলো। অপর মেম্বর আব্বাস আলী বলেন, কিছু পণ্য বেচে যাওয়ায় তা ইউনিয়ন পরিষদের সিড়িতে রেখে দিয়েছিলো। এসব মাল কে নিয়ে যাচ্ছিলো আমার জানা নেই।
এ প্রসঙ্গে টিসিবির ডিলার খান এন্টারপ্রাইজের মালিক কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া এলাকার খান গোলাম মোস্তফা বলেন, শনিবার আউড়িয়ায় মাল দিতে দিতে ৫০ কেজি চিনি ও ৭৭ কেজি ডাল কার্ডধারীদের দিতে বাকি ছিল। স্থানীয় দু’মেম্বর বলে, আপনি (ডিলার) চলে যান মাল কার্ডধারীদের দিয়ে দেব। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় এবং আমার কাছ ৪লাখ টাকার বেশী থাকায় নিরাপত্তার কারণে আমি বাড়ি চলে আসি।
এ ব্যাপারে আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম পলাশ বলেন, শনিবার আমি সারাদিন উপস্থিত থেকে টিসিবির পণ্য কার্ডধারীদের মধ্যে সুলভ মুল্যে বিক্রি করেছি। বিকেেেল জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে চলে গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারি কিছু চিনি ও ডাল আটক করেছে জনগণ। পরিষদের যেই অন্যায় করুক তার উপযুক্ত বিচার চাই। আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী সাব্যস্ত হলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্বে) মাহমুদুর রহমান বলেন, খবর শোনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটককৃত পন্য জব্দ তালিকা করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তথ্য জানতে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফকরুল হাসানকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।