স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের দেবভোগ গ্রামের সালাম ও জামাল শেখের বসতবাড়ি ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৮ জানুয়ারি) গভীর রাতে ওই গ্রামের সুফল বিশ্বাসের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে প্রচন্ড শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে রয়েছে পরিবারের সদস্যরা।
ক্ষতিগ্রস্থ দুই ভাই সালাম ও জামাল শেখ জানান, প্রায় তিন বছর আগে দেবভোগ গ্রামের রাধাবল্লভ বিশ্বাসসহ তার তিন ভাইয়ের কাছ থেকে এক একর ২৬ শতক জমি কেনেন তারা। নিয়মানুযায়ী জমি রেজিষ্ট্রেশন ও নামপত্তন সম্পন্ন হয়। তিন মাস আগে ওই জমিতে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন পরিবারের সদস্যরা। হঠাৎ করে রোববার রাতে রাধাবল্লভের ভাইপো সুফল বিশ্বাসের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫জন তাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় একটি করে বসতঘর, রান্নাঘর ও বাথরুমসহ বাড়ির জিনিসপত্র ভাংচুর এবং পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কনকনে শীতের মধ্যে সালাম ও জামাল শেখের পরিবারের ১৫ সদস্য খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ভুক্তভোগীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে সোমবার সকালে নড়াইল সদর থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে, এ ঘটনার প্রায় ছয় মাস আগে সালাম ও জামালের পরিবারের সদস্যরা জমিতে গেলে জমিদাতারা হামলা চালিয়ে চার নারীকে পিটিয়ে আহত করে। এ হামলায় শাশুড়ি মোমেনা বেগমসহ (৪৫) তার তিন পুত্রবূধূ মমতাজ বেগম (২৫), ইতি বেগম (১৮) ও আছমা বেগমকে (২২) পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তারা।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে সুফল বিশ^াস বলেন, সালাম ও জামাল শেখের বাড়িতে আমার নেতৃত্বে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। কে বা কারা হামলা করেছে জানি না। আমি যশোরে অবস্থান করছি। এ জমি নিয়ে বিরোধ থাকায় আদালতে মামলা চলছে। বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের নিউজ করলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
তবে ক্ষতিগ্রস্থ সালাম শেখের ছেলে ইমন বলেন, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা যাওয়ার প্রায় ২০মিনিট আগেও সুফল বিশ্বাস লাঠি উঁচিয়ে ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি দেখান। তিনি (সুফল বিশ্বাস) যশোরে আছেন বলে মিথ্যাচার করেছেন।
এদিকে বিভিন্ন পেশার মানুষ দাবি করেন, বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় সুফল বিশ্বাস কোথায় অবস্থান করছিলেন; তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিলেই আইনশৃংখলাবাহিনী তা জানতে পারবে।
অন্যদিকে শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই খায়রুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা খায়রুল আলম সবসময়ই সুফল বিশ্বাসদের পক্ষে কাজ করেন। আমাদের কোনো কথা শুনতে চান না। উল্টো হয়রানি করেন। সাংবাদিক ছবি তোলার সময়ও এসআই খায়রুল আলম জবাবদিহিতা করে জানতে চান, কারা ছবি তুলছে?
এ ব্যাপারে এসআই খায়রুল আলম জানান, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে; তা ঠিক নয়।
নড়াইল সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।