স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের রুখালী গ্রামের কতিপয় অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীদের নামে চিংড়ি মাছে সিরিঞ্জের মাধ্যমে জেলী পুশ করে বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এদের ভিতর অন্যতম হলো সদর উপজেলার রুখালী গ্রামের মশিয়ার বিশ্বাস। সম্প্রতি মশিয়ারের চিংড়ি মাছে জেলী পুশ করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে নড়াইল জেলাব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি ব্যারেলে করে চিংড়ি মাছ ডেলে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে চিংড়ি মাছে জেলি পুশ করে বে-আইনীভাবে ওজন বাড়াচ্ছে। চিংড়ি মাছের জেলি প্রদানকারী চক্রের মূল হোতার ভিডিও ধারণকারীকে একেরপর এক মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নজরে এনে বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুক হুমকি-দাতাদের বিচার ও চিংড়ী মাছে জেলী দেওয়ার ভিডিও ধারনকারীকে ২ হাজার টাকা পুরুষ্কার ঘোষণা করে তাঁর নিজ ফেসবুক আইডিতে স্ট্যার্টাস দিয়েছেন।
অপরদিকে সদর উপজেলার মির্জাপুর বাজারটিতে সম্প্রতি সময়ে চিংড়ি অবতরণ কেন্দ্র রপ্তানি যোগ্য গলদা,বাগদা ও সাদা মাছ সরবরাহকারী ও কমিশন এজেন্ট রয়েছে। এখান থেকে প্রচুর মাছ ক্রয়-বিক্রয় হয়। অভিযোগ উঠেছে মাছের বাজারে চিংড়ির দাম বেশি। তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের জন্য চিংড়ির ওজন বাড়াতে বিষাক্ত জেলি সিরিঞ্জের মাধ্যমে পুশ করছে। প্রতি কেজি চিংড়িতে কমপক্ষে ২০০ থেকে আড়াই’শ গ্রাম জেলি পুশ করা হয়। বাগদা ও গলদা চিংড়ির এক কেজির দাম এক হাজার থেকে ১২’শ টাকা। সেখানে এক কেজিতে ২০০ গ্রামই জেলি থাকে। জেলি পুশ করেতে ১০ টাকা খরচ হলে কেজিতে বাড়তি লাভ ২০০ টাকা। ওজন বাড়ানো ছাড়াও পচনরোধক ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়। দেশের বাজারে চিংড়ি মাছের চাহিদা ও দাম বেশি। এ সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আসায় রমরমাভাবে এ অবৈধ ব্যবসা করছে।
নড়াইল সদর হাসপাতালের ডাক্তার অলোক কুমার বাগচী বলেন, কেমিক্যাল মিশ্রিত জেলি পুশ করা চিংড়ি মাছ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ মাছ খেলে কিডনিতে সমস্যা হতে পারে। এছাড়া ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চিংড়ী মাছ ব্যবসায়ী মশিয়ার বিশ্বাসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুক বলেন, জেলায় মাছের বাজারগুলোর জালিয়াতি বেড়েছে, মাছে রং লাগিয়ে বিক্রি, মাছে ইনজেকশনের সিরিঞ্জের মাধ্যমে জেলি পুশ করে ওজন বাড়িয়ে বিক্রিসহ নানা অনিয়ম তদারকিতে গাফিলতি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এদেরকে সনাক্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো.এনামুল হক জানান, মাছের আড়তে এধরণের ঘটনার সত্যতা পেলে তাৎক্ষণিক ভাবে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।