স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা লতিফুর রহমান পলাশকে (৪৮) গুলি করে হত্যার ঘটনার সাড়ে পাচ মাস পার হলেও পুলিশ এ মামলার এখন চার্জশীট দাখিল করে নাই। যার কারনে জামিনের আসামী ও পলাতক আসামীরা সাক্ষী ও ভুক্তভোগী পরিবারদের মামলা তুলে নেওয়া ও বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেওযার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার। এলাাকাবাসীর দাবী দ্রুত চার্জশীট প্রদান করে দ্রুত বিচার ট্রাইবুলানে আসামীদের বিচারের ব্যবস্থা করা হোক।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক লতিফুর রহমান পলাশকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর পৌনে ১২টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে লোহাগড়ার দিঘলিয়ার বাড়ি থেকে অফিসের কাজে লোহাগড়া উপজেলায় আসেন ইউপি চেয়ারম্যান পলাশ। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন অফিস এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল আরোহী ইউপি চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান পলাশকে প্রথমে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান পলাশ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। ১৮ ফেব্রুয়ারি (রোববার) রাতে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত পলাশের বড় ভাই সাইফুর রহমান হিলু।
এ মামলার আসামিরা হলেন-উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গত ইউ পি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ মাসুদজ্জামান মাসুদ, দিঘলিয়ার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহম্মেদ মাসুম, দিঘলিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি স ম ওহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামানের ভাই শরীফ বাকি বিল্লাহ, সোহেল খান, শেখ বনিরুল ইসলাম বনি, শেখ পনিরুল ইসলাম কটো, হেদায়েত আলী হোসেনসহ ১৫জন। এদের মধ্যে ১৪ জনের বাড়ী কুমড়ি গ্রামে। মুলত কুমড়ি গ্রামের আধিপাত্য বিস্তার ও কোন্দলের কারনেই এ হত্যাকান্ড। কুমড়ি গ্রামের আশি বছরের বৃদ্ধ খাজা শেখ বলেন, পলাশ চেয়ারম্যান ছিলেন মানুষের নেতা, তাকে হত্যার পর বর্তমানে হত্যাকারীরা গ্রামে হত্যা মামলার সাক্ষীদের সাক্ষী না দেবার জন্য হুমকি প্রদান করছে।
কলেজ ছাত্রী রেখা খানম বলেন, পলাশ চেয়ারম্যান ছিলেন মাদক বিরোধী চেয়ারম্যান, আর একারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে। পলাতক আসামীরা আমাদেও গ্রামে এসে আমাদের হুমকি দিচ্ছে যাতে তার পক্ষে আমারা কোন কথা না বলি। পলাশ চেয়ারম্যানের পক্ষে কথা বললে আমাদের কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিবে। মামলার বাদী সাইফুর রহমান হিলু বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নড়াইল জেলা শাখার মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক। আমার ভায়ের মৃত্যূর সাড়ে পাচ মাস অতিবাহিত হল এখন পযর্ন্ত পুলিশ চার্জশীট দিল না,পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করে নাই কোন অদৃশ্য শক্তির কারনে, হত্যায় ব্যবহার কৃত কোন আলামত এখন জব্দ হয় নাই। আমরা আমার ভায়ের বিচার নিয়ে খুবই সংশয়ের মধ্যে আছি। তবে আমরা চাই দ্রুত মামলার চার্জশীট প্রদান করে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে নিয়ে বিচার করা হোক।
মামলার সাক্ষী লতিফুর রহমান পলাশের স্ত্রী ও বর্তমান দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নীনা ইয়াসমিন বলেন, মামলার পলাতক ও জামিনে থাকা আসামীরা মামলার অন্য সাক্ষীদের মামলায় সাক্ষী না দেওয়ার জন্য তাদের জীবননাশের হুমকি প্রদান সহ সাক্ষীদের ছেলে মেয়েদের স্কুল কলেজে যাওয়ার পথে ভয় ভীতি প্রদান করছে। মামলার ১নং সাক্ষী মুক্ত রহমান বলেন, যেহেতু পলাতক আসামী ও জামিনে থাকা আসামীরা আমার ও আমার পরিবারের জীবননাশের হুমকি প্রদান করছে সে কারনে অবিলম্বে পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করে দ্রুত মামলার চার্জশীট প্রদান করে আসামীদের বিচারে আনা হোক। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মর্কতা ও লোহাগড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ ( তদন্ত) বলেন, আসামী গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার করার জন্য মামলার চার্জশীট প্রদানে দেরী হচ্ছে। আলামত জব্দ পলাতক আসামীদের করেই মামলার পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
এলাকাবাসীর দাবী জনপ্রিয় এ চেয়ারম্যান হত্যাকারীদের পলাতক আসামীদের গ্রেফতার হত্যায় ব্যবহত অস্ত্র উদ্ধার করে দ্রুত বিচার করা হোক।