ডেস্ক রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শান্তি ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখার জন্য নৌকায় ভোট চেয়ে বলেছেন, ‘নৌকা জনগণের প্রতীক’। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে যে নির্বাচন হবে, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণানুযায়ী আগামী ডিসেম্বরেই হবে নির্বাচন, সেই নির্বাচনে উন্নয়নের ধারবাহিকতা বজায় রাখার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’
শেখ হাসিনা আজ (রোববার) বিকেলে চাঁদপুর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় ভাষণকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার আহ্বান- নৌকা মার্কা আপনাদের মার্কা, এই নৌকা মার্কা সবসময় মানুষকে উদ্ধার করে। নূহ নবীর নৌকা মানবজাতি এবং পশুপাখি সব রক্ষা করেছিল। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা স্বাধীনতা পেয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের উন্নয়নের ধারবাহিকতা ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, হত্যাকান্ড, খুন-খারাবি নয়, দেশের মানুষ যাতে শান্তি পায় সেই ব্যবস্থা আমরা করতে চাই। আর ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম বলেই আজকে সে উন্নয়নের সুফল আপনারা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেই ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে চাই। আর ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত। এ জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা দরকার।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর অন্যান্য প্রাক নির্বাচনী জনসভার মত নৌকায় ভোট প্রদানের জন্য উপস্থিত জনগণের দুই হাত তুলে ওয়াদা চাইলে জনগণ দুই হাত তুলে এবং চিৎকার করে ভোট দেয়ার অঙ্গীকার করে।
চাঁদপুর বাসীর উন্নয়নে তাঁদের কোন কিছু দাবি করা লাগবেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এখানে আড়াইশ’ বেডের একটি হাসপাতাল করে দিয়েছি এবং একটি মেডিকেল কলেজও করে দেব। আর চাঁদপুরের হাইমচরে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দেব, পর্যটনের কেন্দ্র এখানে গড়ে তোলা হবে, নৌ ভ্রমণের জন্য বন্দোবস্ত সেখানে থাকবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপুমনি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর বিক্রম জনসভায় বক্তৃতা করেন। চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া স্থানীয় সাংসদ এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দও জনসভায় বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাঁদপুরের জন্য স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন, সব কিছুর উন্নয়নেই তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আজ ৪৭ টি উন্নয়ন প্রকল্পে উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থপন করা হয়েছে। চাঁদপুরের উন্নয়নে তাঁর সরকার কিছুই বাদ রাখেনি, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছিলাম। ২০১৪ সালে খালেদা জিয়া আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল তারপরও জনগণ ভোট দিয়েছে, আপনারা ভোট দিয়েছেন, চাঁদপুরবাসী ভোট দিয়ে প্রত্যেকটা সিটে নৌকা মার্কাকে জয়যুক্ত করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বলে গেছেন, ভিক্ষুকের জাতির কোন ইজ্জত থাকে না। আমরা সব জেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করবো। বাংলাদেশ হবে ভিক্ষুকমুক্ত। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলবো, কারোর কাছে হাত পাতবো না।
জনসভায় খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা টাকা মেরে দিয়েছে। এতিমের হক মেরে না খাওয়ার জন্য যেখানে পবিত্র কোরআন শরীফে পর্যন্ত নিষেধ আছে। তার জন্য আবার কিসের আন্দোলন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে টাকা পাচারের অভিযোগে বিদেশে মামলা হয়েছে। আমরা সে টাকা সেখান থেকে ফেরত এনেছি’।
প্রধানমন্ত্রী জনসভায় তাঁর সরকারের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী জিরো টলারেন্সনীতির পুনরুল্লেখ করে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং মাদক থেকে পুত্র ও পোষ্যদের দূরে রাখতে অভিভাবক, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম এবং ধর্মগুরুদের প্রতি আহবান জানান। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সন্তান কোথায় যায়, কেন যায় সে বিষয়ে আপনারা লক্ষ্য রাখবেন। তরুণ প্রজন্মকে মাদক ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখতে হবে। এজন্য অভিভাবকদের ভূমিকা রাখতে হবে।