স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের কালিয়ায় নিজ বাড়িতে দিন দুপুরে রহস্যজনক ভাবে চাঞ্চল্যকর গৃহবধু আঙ্গুরী বেগম (৫৫) হত্যার রহস্য গত এক মাসেও উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। ওই সময়ের মধ্যে পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কোন খুনিকে আটক করতে পারেনি। ঘটনা স্থলে থেকে অঞ্জান অবস্থায় উদ্ধারকৃত নিহতের পুত্রবধু তানজিলা বেগম পুলিশের কাছে দেয়া জবানবন্দিতেও খুনিদের শনাক্ত করা যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। গৃহবধু আঙ্গুরী হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ যেমন বিপাকে পড়েছে, তেমন স্থানীয় মানুষের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে হতাশা, কৌতুহল ও চাঞ্চল্যের। আর নিহতের পরিবার রয়েছে অজানা আতঙ্কে বলে তার পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, গত ৩০ আক্টোবর সকাল ৭ টার দিকে উপজেলার চাপুলিয়া গ্রামের সবুর খান তার স্ত্রী আঙ্গুরী বেগম ও পুত্রবধু তানজিলাকে বাড়িতে রেখে বাজার করতে পার্শ্ববর্তী বারইপাড়া রাজারে যান। সকাল ৯ টার দিকে বাজার থেকে ফিরে তিনি প্রথমে পুত্রবধু তানজিলাকে বসতঘরের বারান্দায় অঞ্জান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার কাছে ছুটে যান। এবং পরক্ষনেই অন্য ঘরের মেঝেতে তার স্ত্রী আঙ্গুরী বেগমের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। ঘটনাটি জানাজানি হলে খবর পেয়ে কালিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধারসহ অঞ্জান অবস্থায় পড়ে থাকা তানজিলাকে চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যায় তানজিলা ঞ্জান ফিরে পেলে পুলিশের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে সে বলেছিল, ঘটনার দিন সকাল ৮ টার দিকে কয়েকজন অপরিচিত কয়েক জন লোক ওই বাড়িতে গিয়ে প্রথমে তার শ্বশুর ও স্বামী বাড়িতে আছে কিনা জানতে চায়। বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ নেই বলে তাদেকে জানানোর পর তারা তাকে নলকুপ মেরামতের যন্ত্রপাতি দিতে বলে। তানজিলা নলকুপ মেরামতের যন্ত্রপাতির ব্যাগ এগিয়ে দিতে গেলে খুনিরা তাকে ধরে বাড়ির একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়। তাকে রক্ষা করতে শ্বশুড়ী আঙ্গুরী বেগম এগিয়ে এলে তাকেও ধরে বাড়ির অন্যঘরে নিয়ে যায়। এরপর তানজিলাকে হাত-পা বেধে ফেললে সে ঞ্জান হারিয়ে ফেলে বলে পুলিশকে জানিয়েছিল। সে কারনে পুলিশের আবেদনের মাধ্যমে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ওই ডাক্তারী পরীক্ষায় তানজিলার ইজ্জতহানির কোন প্রমান মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। স্ত্রী হত্যার ঘটনায় অঞ্জাত নামাদের আসামী করে নিহতের স্বামী সবুর খান বাদি হয়ে ওইদিন রাতেই কালিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তানজিলার জবানবন্দির সুত্র ধরে ডাক্তারী পরীক্ষার মাধ্যমে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও খুনিদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করলেও ডাক্তারী পরীক্ষায় সে প্রমান না মেলায় আঙ্গুলী হত্যার রহস্য অন্ধকারেই রয়ে গেছে। নিহতের ছেলে জাকির খান বলেছেন, মামলার এজাহারে সন্দেহ ভাজন কয়েজনের নাম থাকলেও তারা গ্রেফতার না হওয়ায় পরিবার নিয়ে তিনি আতংকে রয়েছেন। কালিয়া থানার পরিদর্শক তদন্ত মোঃ ইকরাম হোসেন বলেছেন, পুলিশের তালিকায় কয়েকজন সন্দেহভাজন খুনির নাম থাকলেও তারা পলাতক থাকায় তাদেরকে আটক করা সম্ভব হয়নি। হত্যাকান্ডের প্রকৃত কারন জানা গেলে আসামী শনাক্ত করা সহজ হবে বলে তিনি মনে করে।