সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল: প্রধানমন্ত্রী

13
30

ডেস্ক রিপোর্ট/এমএসএ

সারদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের কথা বললেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার কর্তৃক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরে এই আন্দোলনের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার (১১ এপ্রিল) দশম জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবিতে লেখাপড়া বন্ধ করে রাস্তায় বসে থাকা, রাস্তার চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় দুঃখ প্রকাশ করেন। জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কর্মকাণ্ড ব্যাহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ভোগান্তি ও গোলযোগ বন্ধে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা হলো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোগী হাসপাতালে যেতে পারছে না। সাধারণ জনতা তাদের কর্মস্থলে পৌছাতে পারছে না, কাজকর্ম করতে পারছে না। সকল জায়গাতেই এ অবস্থা বিরাজ করছে। জেলায় কোটা আছে। কিন্তু সেই জেলায় যে ইউনির্ভার্সিটি রয়েছে সেখানেও তারা রাস্তায় নেমে যাচ্ছে। যখন জেলায় যারা তারাও কোটা চায় না, তারাও রাস্তায় নেমে গেছে। যখন কেউ-ই চায়না, তখন কোন কোটাই থাকবে না, কোন কোটারই দরকার নেই।’

তিনি বলেন, ‘কোন কোটার দরকার নেই। ঠিক আছে, বিসিএস যেভাবে পরীক্ষা হবে সেভাবে মেধার মাধ্যমে সব নিয়োগ হবে। এতেতো আর কারো আপত্তি থাকার কথা না… আর যারা প্রতিবন্ধী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কোটায় সুযোগ পাচ্ছে তারাওতো মেধাবী, সেখানেও তো মেধা থেকেই নিয়োগ হচ্ছে। কাজেই তাদের মেধাকেও যদি আমরা ধরি, তাহলে দেখা যাচ্ছে শতভাগই মেধাবী নিয়োগ পাচ্ছে। তারপরও আন্দোলন চলছে, তারা রাস্তা বন্ধ করে রাখছে। এমনিই যানজট, তার ওপর তীব্র যানজট। রোগী যেতে পারছে না হাসপাতালে।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘আমি ছাত্রদের বলবো- তারা তাদের আন্দোলন অনেক করেছে। এখন ক্লাসে ফিরে যাক, যারা ভিসির বাড়ি ভেঙ্গেছে এবং লুটপাট করেছে, সেই লুটের মাল কোথায় আছে, কার কার কাছে আছে- ছাত্রদেরই তা খুঁজে বের করে দিতে হবে। সেই সাথে যারা এই ভাংচুর লুটপাটের সাথে জড়িত তাদের অবশ্যই বিচার হতে হবে। ইতোমধ্যে আমি গোয়েন্দা সংস্থাকে জানিয়েছি। এটা তদন্ত করে বের করেতে হবে। আমি শিক্ষার্থী ও শিক্ষদের কাছে সহযোগিতা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আলোচনা হল। একটি সুনির্দিষ্ট তারিখ দিল। ক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে আমই দায়িত্ব দিলাম। তারা সে সময়টা দিল না। মানিনা, মানবো না বলে তারা (শিক্ষার্থী) যখন বসে গেল, ধীরে ধীরে সবাই যুক্ত হল। তো খুব ভালো কথা সংস্কার সংস্কার করতে গেলে কিছু দিন পর আরেক দল এসে বলবে আবার সংস্কার চাই…কাজেই কোটা পদ্ধতি থাকারই দরকার নেই। আর যদি দরকার হয় আমাদের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি তো আছেন তাঁকে আমি বলে দিয়েছি সংশিষ্টদের সাথে বসে তারা কাজ করবে এবং সেখান থেকে তারা দেখবে। কিন্তু আমি মনে করি এরকম আন্দোলন বার বার হবে, বার বার শিক্ষার সময় নষ্ট হবে…সাধারণ মানুষ প্রতিবার কেন কষ্ট পাবে? এই কষ্ট বন্ধ করার জন্য, এই আন্দোলন বন্ধের জন্য কোটা পদ্ধতি বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি’।

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের এক সম্পূক প্রশ্নের উত্তরে এ বক্তব্য রাখেন।

ছবিঃ ইয়াসিন কবির জয়