নিউজ ডেস্ক
আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট বাস্তবায়ন হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারসহ জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউব ও অনুসন্ধান ইঞ্জিন গুগল ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার জন্য এসব কোম্পানিকে বাংলাদেশে হয় অফিস স্থাপন করতে হবে অথবা মূসক এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। এই এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনাবাবদ বাংলাদেশ সরকারকে রাজস্ব প্রদান করবে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব বা গুগলের মতো জনপ্রিয় মাধ্যম থেকে এখন তেমন ভ্যাট পাওয়া যায় না। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের মূসক নিবন্ধন নেই। দেশে তাদের কোন অফিসও নেই। এছাড়া এসব সাইটে অনেক বিজ্ঞাপন দেখা যায়। কিন্তু বিজ্ঞাপন থেকে কি পরিমাণ আয় হয় কিংবা বিজ্ঞাপনের অর্থ কিভাবে পরিশোধ হয় তাও জানা নেই। তবে নতুন আইন অনুযায়ী নিবন্ধন নিয়ে ব্যবসা করতে হবে। আইনের ব্যত্যয় হলে বাংলাদেশে এসব প্রতিষ্ঠানের সাইট বন্ধ করে দেওয়ার এখতিয়ার আইনে রয়েছে।
এনবিআর সূত্র জানায়,নতুন ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ আইন এর ১৯ ধারা অনুযায়ী ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল-এর মতো প্রতিষ্ঠানকে মূসক নিবন্ধন নিতে হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন অথবা মূসক এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। নিবন্ধন এসব প্রতিষ্ঠানের নামে হলেও মূসক এজেন্ট ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবে। তাই বিজ্ঞাপন ও তাদের আয়ের উপর মূসক এবং আয়কর পরিশোধ করবে। আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন না নিলে এনবিআর এসব প্রতিষ্ঠানের সাইট বন্ধ করে দেয়ার জন্য বিটিআরসিকে চিঠি দেবে। এসব প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে অফিস হলে মূসকের পাশাপাশি আয়করও আদায় করা যাবে। উল্লেখ্য, ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও গুগল বছরে বিজ্ঞাপন বাবদ দেশ থেকে কি পরিমাণ টাকা নিয়ে যাচ্ছে তার কোন পরিসংখ্যান নেই। সহজে বহু মানুষের কাছে পৌঁছায় বলে ডিজিটাল প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপনের সংখ্যাও প্রচুর।
এছাড়া দেশে প্রায় দুই হাজার ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এসব মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ব্যয় করে। আবার দেশে ইউটিউব চ্যানেলও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গান, নাটকসহ বিনোদনের বিভিন্ন ভিডিও দিয়ে তরুণরা ইউটিউবের সঙ্গে ‘প্রোফিট শেয়ারিং’ করছেন। আবার ব্যক্তিগতভাবেও অনেকে ফেসবুক পোস্টে বিজ্ঞাপন দিয়ে আয় করছেন। যেসব ফেসবুক পেজের লাইক বা ফলোয়ার লাখের বেশি তারা এই সুযোগ নিচ্ছেন। আবার কোনো অনলাইন প্রতিষ্ঠান সরাসরি তাদের আর্টিকেল, পণ্যের বিজ্ঞাপন অথবা কোনো বক্তব্য সরাসরি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ফেসবুককে অর্থ দিয়ে বুস্ট করছেন।
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন প্রায় ৫০ হাজার ফেসবুক পেজ আছে-যা ই-কমার্স ব্যবসা হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ই-ক্যাবের সঙ্গে সংযুক্ত না থাকাই এদের সম্পর্কে কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তমাল বলেন, অনলাইনে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার পারসেল সরবরাহ করা হয়। যা ঈদের সময় ৪০ থেকে ৪৫ হাজারে পৌঁছায়। অনলাইন বা ই-কমার্স মার্কেটের বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ ৮’শ কোটি থেকে এক হাজার কোটি টাকার মত। তিনি জানান, ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের বিজ্ঞাপন বুস্ট করার জন্য দৈনিক ৫ থেকে ১০ মার্কিন ডলার ব্যয় করে থাকে। ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবসহ ডিজিটাল ফ্লাটফর্মের ব্যবসা বা বিজ্ঞাপনসমূহ বৈধ চ্যানেলে নিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সূত্রঃ বাসস