স্টাফ রিপের্টার
নড়াইলের কালিয়া ও নড়াগাতী থানা নিয়ে কালিয়া উপজেলা গঠিত। কৃষি নির্ভর এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কালিয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকের উৎপাদিত ধান ঘরের গোলায় ও বস্তায় রেখে অনিশ্চয়তায় মধ্যে দিন কাটাচ্ছে কৃষকরা। অপরদিকে অসাধু সিন্ডিকেটের দখলে থাকা প্রভাবশালী ও ব্যবসায়ীদের ধানে খাদ্য গুদামে সরকারী টার্গেট পরিপূর্ণ হচ্ছে। সাধারণ অনেক কৃষক খাদ্য গুদামে ধান দিতে না পারায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্টদের এদিকে কোন খেয়ালই নেই। কালিয়ার সচেতন মহল ও প্রকৃত কৃষকরা জেলা পশাসক বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কালিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে,কালিয়ায় চলতি মৌসুমে ১৬হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। চলতি মৌসুমে ধান উৎপাদন হয়েছে ১লক্ষ০৯হাজার ৯৭৫ মেট্রিক টন। এ মৌসুমে সরকার কালিয়া ও বড়দিয়া খাদ্য গুদামের জন্য ধান ক্রয় করবেন মোট ১হাাজার ৪২১ মেট্রিক টন। ২০১১ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী অত্র উপজেলার খাদ্য গ্রহন করতে ধানের প্রয়োজন ৭০হাজার ৯১৯ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত ধান থাকে ৩৭হাজার ৬৩৫ মেট্রিক টন। কৃষকের উৎপাদিত ধান পুরোটাই রয়ে গেছে তাদের ঘরের গোলায় বা বস্তায়।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে সরকার প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে ৪৪৩ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করবেন। যা উৎপাদিত ধানের তুলনায় একেবারেই নগন্য। তাও সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ক্রয় করার কথা। কিন্তু এপর্যন্ত প্রথম পর্য্যায় কালিয়া খাদ্য গুদাম ২৬২মেট্রিক টন ধান ক্রয় করেছেন। বাকী আছে ১৮১ মেট্রিক টন। গত মঙ্গলবাব (২জুলাই) নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করার দিনে ৮মেট্রিক টন ধান ক্রয় দেখানো হয়। এরপর ধান ক্রয় বন্ধ রাখা হয়েছে। কালিয়ায় খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শকের যোগসাজসে সিন্ডিকেট চক্র রাতে খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ধান পূণরায় ক্রয় করার আগে মাইকিং করবেন না বলে খাদ্য গুদামের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। পুূণরায় কবে ধান ক্রয় করবেন তাও তারা জানাচ্ছেন না। যা কৃষকদের সঙ্গে তামাশা করা হচ্ছে বলে বাকা গ্রামের শরীফ নাসির মাহমুদ নামে এক কৃষক মন্তব্য করেন।
নওয়াগ্রামের গোলাম নামে এক কৃষক জানান, কৃষি কার্ড নিয়ে কালিয়া খাদ্য গুদামে ধান বিক্রয়ের জন্য গেলে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা নানা তাল বাহানা করে ফেরত পাঠিয়েছেন। একই অভিযোগ জোকা গ্রামের মামুন নামে অপর কৃষকের। কালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সুবির কুমার বিশ্বাস সোমবার সকালে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। বিধায় সর্বাগ্রে প্রকৃত কৃষকদের প্রাধান্য দিতে হবে। তানাহলে তারা কৃষিকাজে উৎসাহ হারাবে। এ বিষয় সংশ্লিষ্টদের বিশেষ দৃষ্টি দেয়া উচিত।’
তবে কালিয়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক বিপ্লব কুমার বিশ্বাস সোমবার দুপুরে বলেন, ‘খাদ্য গুদামে জায়গা নেই। অপরদিকে জুন ক্লোজিং এর জন্য ধান ক্রয় বন্ধ আছে। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে ৮৮৮ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের কাজ প্রক্রিয়াধীন।’