স্পোর্টস ডেস্ক
শেষ দিনের প্রথম দুই বলেই স্টুয়ার্ট ব্রড তুলে নিলেন দুই উইকেট। তাতে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ইংল্যান্ডের জয়ের আশা জেগেছিল বেশ ভালোভাবেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়টা আর পাওয়া হলো না ইংলিশদের। ইশ সোধি এবং নিল ওয়েগনারের ব্যাটিং দৃঢতায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট ড্র করেছে নিউজিল্যান্ড। এই ড্রয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতল কেন উইলিয়ামসনের দল। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমের পর দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতল নিউজিল্যান্ড।
সোধি ও ওয়েগনার অষ্টম উইকেটে ৩১.২ ওভারে গড়েন ৩৭ রানের জুটি। সোধি ১৬৮ বলে ৯টি চারে অপরাজিত থাকেন ৫৬ রানে। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া ওয়েগনার ১০৩ বলে খেলে করেন ৭ রান।
এরআগে, হ্যাগলি ওভালে মঙ্গলবার বিনা উইকেটে ৪২ রান নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের প্রয়োজন ছিল আরও ৩৪০ রান। সেই লক্ষ্য তাড়ার চেষ্টাতেই যায়নি নিউ জিল্যান্ড।
আগের দিন বিনা উইকেটে ২৩ ওভার কাটিয়ে দিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার। পঞ্চম দিন প্রথম বলেই রাভালের উইকেট নিয়ে তাদের বিচ্ছিন্ন করেন স্টুয়ার্ট ব্রড। পরের বলে মিলে আরও বড় শিকার। অধিনায়ক উইলিয়ামসনের উইকেট। দারুণ এক ডেলিভারিতে তাকে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ দেন ব্রড। ব্রডের হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া রস টেইলর বেশিক্ষণ টিকেননি। তাকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম উইকেট নেন জ্যাক লিচ।
প্রথম ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বিজে ওয়াটলিং এবার বেশিদূর যেতে পারেননি। মার্ক উডকে ফ্লিক করে করা পড়েন ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে। এক প্রান্ত আগলে রাখা টম ল্যাথামকে ফেরান লিচ। বাঁহাতি স্পিনারের বলে দারুণ এক ক্যাচ নেন জেমস ভিন্স। ২০৭ বলে খেলা ল্যাথামের ৮৩ রানের ইনিংস গড়া ১০টি চারে।
এরপরই শুরু হয় সোধির প্রতিরোধ। প্রথম পর্বে তার সঙ্গী ছিলেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। দুই জনে কাটিয়ে দেন ২৫.৫ ওভার। উডের শর্ট বল পুল করে উড়ানোর চেষ্টায় ডি গ্র্যান্ডহোমের বিদায়ে ভাঙে ৫৭ রানের জুটি। তখনও খেলার অনেক বাকি। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল শেষ ৩ উইকেট। কিন্তু ওয়েগনারকে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটিতে ম্যাচ বাঁচান তৃতীয় ফিফটি পাওয়া সোধি।
শেষের দিকে ইংল্যান্ডের সব ফিল্ডার ছিলেন ৩০ গজের ভেতরে। ম্যাচের শেষ ওভারের চতুর্থ বলে ওয়েগনারকে ফিরিয়ে দেন রুট। আর এই উইকেট দিয়েই শেষ হয়ে যায় ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। সোধির ব্যাটিং বীরত্বে টেস্ট ড্র করে নিউ জিল্যান্ড।
এর আগে, ইংল্যান্ড বেয়ার্স্টোর সেঞ্চুরিতে ১ম ইনিংসে ৩০৭ রান করে। জবাবে, কিউইরা ১ম ইনিংসে ২৭৮ রানে অল আউট হয়। ইংল্যান্ড ২য় ইনিংসে ৩৫২ রানে ইনিংস ঘোষনা করলে স্বাগতিকদের সামনে ৩৮২ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়।
অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন টিম সাউদি। দুই ম্যাচেই দারুণ বোলিং করা ট্রেন্ট বোল্ট জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩০৭/১০ (বেয়ার্স্টো ১০১, উড ৫২; সাউদি ৬২/৬, বোল্ট ৮৭/৪)
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৭৮/১০ (ওয়াটলিং ৮৫, গ্রান্ডহোম ৭২, সাউদি ৫০; ব্রড ৫৪/৬, এন্ডার্সন ৭৬/৪)
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৩৫২/৯ ডিঃ (স্টোনম্যান ৬০, ভিন্স ৭৬, রুট ৫৪, মালান ৫৩; গ্রান্ডহোম ৯৪/৪)
নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৮২) ২৫৬/৮ (ল্যাথাম ৮৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪৫, সোধি ৫৬*; ব্রড ২/৭২, উড ২/৪৫, লিচ ২/৬১)
ফল: ড্র
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজ নিউজিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে জয়ী
ম্যাচ সেরা: টিম সাউদি
সিরিজ সেরা: ট্রেন্ট বোল্ট।
Pic: GETTY