ডেস্ক রিপোর্ট
গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভ দমাতে শুক্রবার তাদের ওপর ইসরায়েলী বাহিনী গুলিবর্ষণ চালায়, এতে অন্তত তিন বিক্ষোভকারী নিহত এবং প্রায় ছয়শ’ জন আহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
গাজা সীমান্তে এ নিয়ে টানা পঞ্চম সপ্তাহে বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তমুখী এ বিক্ষোভে তেল আবিব অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ করছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জেইদ রা’দ আল হুসেইনের সমালোচনার কয়েক ঘণ্টা পরই ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ফের ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী নিহতের এ খবর এল।
গত ৩০ মার্চ শুরু হওয়া ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’-এ এখন পর্যন্ত ৪১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি। শুক্রবারের (২৭ এপ্রিল) হামলায় গুলিবিদ্ধ দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র। এছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন অন্তত ছয়শ’ লোক। আহতদের মধ্যে বেশ ক’জন সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, গাজার ১২ থেকে ১৪ হাজার বিক্ষোভকারী ইসরায়েলি সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিরোধ করা হয়।
১৯৪৮ সালে শরণার্থী হওয়া লাখ লাখ মানুষকে ইসরায়েলের দখলে থাকা এলাকায় ফিরতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে সীমান্ত বরাবর ‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ নামের এ বিক্ষোভের ডাক দেয় হামাসসহ বিভিন্ন সংগঠন। শুরুর দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয় ৩০ মার্চকে; ১৯৭৬ সালের এই দিনে ভূমি দখলের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হন। ভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার ৭০তম বার্ষিকীতে আগামী ১৫ মে এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার নির্ধারিত তারিখ।
ফিলিস্তিনিদের দাবি, শরণার্থী হওয়া পরিবারগুলোকে তাদের ভূমিতে ফিরতে দিতে হবে। রয়টার্স বলছে, ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের ইট পাথর নিক্ষেপের প্রত্যুত্তরে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী গাজা সীমান্তের ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ বেষ্টনীর পেছনে নিজেদের দখলে থাকা ভূমি থেকে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে তাজা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা কমে আসায় হতাশ ফিলিস্তিনিদের বাড়তে থাকা ক্ষোভের বহিপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে এবারের বিক্ষোভে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনা বন্ধ বেশ কয়েক বছর ধরে, উল্টোদিকে তেল আবিব একের পর এক এলাকায় দখলদারিত্ব বাড়িয়েই চলছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি বর্ষণ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। দেশটির সরকার অবশ্য শুরু থেকেই সীমান্ত রক্ষা করতেই এ ধরনের পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করে আসছে।
Pic: REUTERS