ডেস্ক রিপোর্ট
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর উৎসব আমেজে আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৮টা থেকে ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই সকাল থেকে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
এদিকে, রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মণ্ডল জানান, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে নয়টির ভোটগ্রহণ তারা স্থগিত করেছেন। কেন্দ্রগুলো হল- ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এম ই এইচ আরিফ কলেজ (৬১ নম্বর কেন্দ্র), ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের গাজীপুরের ভোগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (৯৮ নম্বর কেন্দ্র), ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বিন্দান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (২৭৪ নম্বর কেন্দ্র), ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের জাহান পাবলিক দত্তপাড়া কেন্দ্র (৩৪২ নম্বর কেন্দ্র), ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের খরতৈল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয়ের দুটি কেন্দ্রে (৩৭২, ৩৭৩ নম্বর কেন্দ্র), ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের টঙ্গীর দক্ষিণ আউচপাড়ার হাজী কাসিম উদ্দিন বিএম এন্ড কমার্স কলেজ কেন্দ্র (৩৮৯ নম্বর কেন্দ্র)।
এই সিটি কর্পোরেশনের ভোটগ্রহণে নির্বাচন কমিশন কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি নির্বাচনী অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ঠেকাতে কমিশন এবারই প্রথম ভোট গ্রহণ পরিস্থিতির তথ্য তাৎক্ষণিক জানার ব্যবস্থা নেয়। প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে দু’ঘণ্টা পরপর প্রয়োজনীয় সার্বিক তথ্য কমিশন সচিবালয়কে জানায়।
ভোট কেন্দ্রে কোনো অঘটন ঘটলে বা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তা তাৎক্ষণিকভাবে এসএমএসের মাধ্যমে কমিশনকে জানানোর নির্দেশনা ছিল কর্মকর্তাদের উপর। এক্ষেত্রে কমিশন ঢাকায় বসে এসব এসএমএসের তথ্য অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট কার্যক্রমের গতি-প্রকৃতি, ভোটার, প্রার্থী-কর্মী-সমর্থকদের গতিবিধি এবং সর্বোপরি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনসহ সব কিছু সাধারণ পোশাকে ঘুরে ঘুরে পর্যবেক্ষণ করেছেন ইসির নীরব পর্যবেক্ষকরা।
নির্বাচনের নিরাপত্তায় মাঠে টহল দিচ্ছেন কয়েক হাজার বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ সদস্য। আচরণবিধি দেখভাল করতে নির্বাচনী এলাকায় রয়েছেন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, এই সিটি কর্পোরেশনে ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। এ নগরীতে নতুন ভোটার ১ লাখ ১১ হাজার।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম (নৌকা), বিএনপির মো. হাসান উদ্দিন সরকার (ধানের শীষ), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাতপাখা), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন (কাস্তে) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি)।
৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত। এসব ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৩৮ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৫৬টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৫৪ জন। এছাড়া সংরক্ষিত ১৯টি ওয়ার্ডে ৮৪ নারী কাউন্সিলর নির্বাচন করছেন।
এই সিটিতে ৬ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেয়া হচ্ছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিবেচনায় সিটির কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার সহায়তায় ভোটগ্রহণ করছে কমিশন।