ডেস্ক রিপোর্ট
নিজেদের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ দল। এ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে নিজেদের ইনিংসের প্রথম সেশনে মাত্র ৪৩ রানেই অলআউট হয়ে গেছে সফরকারী বাংলাদেশ।
টস জিতে প্রথম ফিল্ডিং বেছে নেয় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ১০ রানে বাংলাদেশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন রোচ। ১৩ বলে ৪ রান করে ফিরেন প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করা তামিম। তিন নম্বরে নেমে রোচের পেসের সামনে অসহায়ত্ব দেখান মোমিনুল হক। মাত্র ৩ বল খেলে রান করেছেন ১।
মিডল-অর্ডারের বাংলাদেশের তিন ব্যাটিং স্তম্ভের পরিণতি আরও খারাপ করে ছেড়েছেন রোচ। বাংলাদেশের নবম ও রোচের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে বিদায় নেন যথাক্রমে মুশফিকুর রহিম-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিন জনের কাউকেই রানের খাতা খুলতে দেননি রোচ। ফলে ৪৮তম টেস্টে অষ্টম ও বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয়বারের মত পাঁচ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়লেন রোচ। এই কীর্তি রোচ গড়েছেন মাত্র ১২টি ডেলিভারিতে।
সবচেয়ে কম ডেলিভারিতে প্রথম পাঁচ উইকেট শিকারে রেকর্ড গড়েছেন রোচ। তবে যৌথভাবে ঐ তালিকায় রোচ আছেন অস্ট্রেলিয়ার মন্টি নোবলে ও দক্ষিণ আফ্রিকার জক ক্যালিসের সাথে। ১৯০২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নোবলে ও ২০০২ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যালিস ১২ বলে প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার করেন। অবশ্য এই তালিকায় পরের দু’টি রেকর্ডও বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০০২ সালে পাকিস্তানের ওয়াকার ইউনিস ১৩ বলে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্মেই লসন বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪ বলে প্রথম পাঁচ উইকেট নেন।
রোচের আগুনে পুড়ে ৮ দশমিক ৫ ওভারে ১৮ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ফলে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ২৬ রানের নিচে গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়ে টাইগাররা। যা ১৯৫৫ সালে অকল্যান্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৬ রানে অলআউট হয়েছিলো নিউজিল্যান্ড। তবে বাংলাদেশকে এমন লজ্জার রেকর্ডের স্বাদ নিতে দেননি ওপেনার লিটন দাস ও উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান।নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এটিই সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর টাইগারদের। বাংলাদেশের আগের সর্বনিম্ন রান ছিলো ৬২। ২০০৭ সালে কলম্বোতে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৫ দশমিক ২ ওভারে ৬২ রানে অলআউট হয়েছিলো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের শেষ চার উইকেট ভাগাভাগি করেছেন কামিন্স ও অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। নুরুল ৪ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১ রান করে কামিন্সের শিকার হন। কামরুল ইসলাম রাব্বিকে শুন্য ও অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা আবু জায়েদকে ২ রানে ফিরিয়ে দেন হোল্ডার। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ৪৩ রান বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর হলেও, বিশ্ব মঞ্চে এই স্কোর ১১তম স্থানে রয়েছে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে এটিই সর্বনিম্ন স্কোর। আরও একটি লজ্জার রেকর্ডের স্বাদ পেতে হয় বাংলাদেশকে। ১১২ ডেলিভারি মোকাবেলা করে নিজেদের ইনিংস গুটিয়ে বাংলাদেশ। টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম ডেলিভারিতে ইনিংস গুটিয়ে নেয়ার বিশ্বরেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার। ২০১৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নটিংহাম টেস্টে ১১৩ বল মোকাবেলা করে ৬০ রান তুলে অলআউট হয়েছিলো অসিরা।
বাংলাদেশকে লজ্জার স্বাদ দিয়ে দিন শেষে ২ উইকেটে ২০১ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার ডেভন স্মিথ ৫৮ রান করে আবু জায়েদের শিকার হন। তিন নম্বরে নামা কাইরেন পাওয়েল ৪৮ রান করে মাহমুদুল্লাহ’র শিকার হন। আরেক ওপেনার ক্রেইগ ব্রার্থওয়েট ৮৮ ও দেবেন্দ্র বিশু ১ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন।
Pic: AFP