স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কবির মন্ডল (৪০) নামের একজন নিহতের ঘটনা প্রায় একমাস অহিবাহিত হলেও আসামী পক্ষের বাড়ি-ঘর ভাংচুর লুটপাট থেমে নেই। গত সোমবার রাতেও একাধিক বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর-লুটপাট করে বাদী পক্ষের লোকজন। এঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না।
সরেজমিন দেখা যায়, রঘুনাথপুর গ্রামের জান্নাত কাজী, ইউসুফ সরদার, সোহেলের বাড়িসহ কমপক্ষে ১০ টি বাড়ি ভাংচুর করে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়েছে। বাড়িতে থাকা মহিলারা-শিশুরা ভয়ে আতংকে দিনাপাত করছে খেয়ে না খেয়ে। পুরুষ শুন্য রয়েছে বাড়িগুলো। প্রতিরাতেই চললে কোন না কোন আসামীর বাড়িতে হামলা ভাংচুর লুটপাট। পুলিশ ঘটনার পর থেকে পারাহায় থাকলেও এর মধ্যেই চলছে এসব ঘটনা বলে অভিযোগ।
সোমবার সন্ধ্যায় জান্নাত কাজীর বাড়ির থাকার ঘর পাকা ছাদের বাড়ি ভেঙ্গে লুটপাট চালানো হয়েছে। ঘরের মধ্যে আলনা,পালংক, ড্রেসিং টেবিলসহ যা যা ছিল সবই নিয়ে গেছে। বাড়ির মহিলাদেরকেও মারধর এমনকি শিশুরাও হামলার স্বিকার হয় বলে জানান জান্নাত কাজীর স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগম।
ইউসুফ সরদার বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে ভয়ে প্রান বাঁচাতে। এ সুযোগে প্রতিপক্ষের লোকজন নতুন ওয়াল করা টিনের ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। বাড়ির আশে পাশের লোকজন কারো সাথে কথা বললেও কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।
প্রসঙ্গত, পুর্ব শত্রুতার জেরধরে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে গত ৫ আগস্ট সকালের দিকে নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি সমর্থিত ইনামুল হক এনাম মেম্বরের দলের সমর্থকদের সাথে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু সমর্থিত বখতিয়ার হোসেন সাবুর সমর্থকদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কবির মন্ডল নামে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যান্যদের নড়াইল ও খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তিকরা হয়েছে। নিহত কবির মন্ডল নিলু খান সমর্থিত বলে জানা যায়। এঘটনায় ৪১ জনকে আসামী করে কালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শমশের আলী বাড়ি-ঘর ভাংচুর লুটপাটের বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়ের রয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলে দাবি করেন ওসি।