স্টাফ রিপোর্টার
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পাড়কোলা গ্রামের তাঁতিপাড়ায় আঁখির জন্ম। তাঁতের শব্দের সঙ্গেই তাঁর বেড়ে ওঠা। বাবা আক্তার হোসেন নিজেও তাঁত শ্রমিক। আর মা নাসিমা বেগম বোনেন সুতো। ছোটবেলায় নিজেও মায়ের সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন সুতো বুনতে। কিন্তু ভাগ্য ও পরিশ্রম কাকে কখন, কোথায় নিয়ে যায়, কে বলতে পারে। ছোটবেলায় সুতো বোনা সেই আঁখি খাতুনই এখন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের উজ্জ্বল নক্ষত্র। অনূর্ধ্ব-১৫ সাফের পর অনূর্ধ্ব-১৮—টানা দুই সাফে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা খেলোয়াড়।
৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার ডিফেন্ডারকে অনেক দূর থেকেও চেনা যায়। শারীরিকভাবে বেশ শক্তিশালী। রক্ষণভাগে খেললেও গোল করা এবং করাতেও পটু বিকেএসপির নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী আঁখি। উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে দারুণ ‘হেড ওয়ার্ক’ তাঁর। পুরো টুর্নামেন্টের একটি ম্যাচেও এরিয়াল বলে লাইন মিস করতে দেখা যায়নি তাঁকে। আঁখির ট্যাকলগুলো হয় নিখুঁত, পজিশন জ্ঞানও প্রখর। সবচেয়ে ভালো গুণ, নিচ থেকে দুই উইংয়ে মাপা ক্রস দিয়ে আক্রমণ সৃষ্টি করতে পারেন। সেন্টারব্যাক সঙ্গী মাসুরার সঙ্গে বোঝাপড়াটাও দারুণ। সবকিছু মিলিয়ে আঁখি হয়ে উঠছেন রক্ষণভাগের দক্ষ সেনানী। স্বাভাবিকভাবেই এটা চোখ এড়ায়নি বিচারকদের। তাই তাঁর হাতে বারবার উঠছে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলের আজকের এই বিপ্লবের পেছনে আছে বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট। আঁখির উঠে আসা এই টুর্নামেন্ট দিয়েই। ২০১৪ সালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ইব্রাহিম বালিকা বিদ্যালয় থেকে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলেন আঁখি। এরপর নাম লেখান বিকেএসপিতে। সেখান থেকে ডাক পান ২০১৫ সালে তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলে। সেখানেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ।