ওশান
খেলার মাঠে মাশরাফীকে আর দেখা যাবে না এটা ভাবতে অনেক ভক্তেরই হৃদয় কেঁপে ওঠে। অনেকেই দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন। তিনি কি ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিবেন? বিশেষ করে একটি প্রশ্ন সম্প্রতি সবার মাথায় ঘুরছে? সামনে নির্বাচন, মনোনীত মাশরাফী কি তার নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পারফর্ম করবেনা?
আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। রাজনীতির মাঠ থেকে কি কিছু সময়ের জন্য খেলার মাঠে ফিরবেন মাশরাফী? ১৪ তারিখ পর্যন্ত খেলা চলবে। আরওতো কিছু সময় আছে নির্বাচনের। মাঠে মাশরাফীকে দেখলে কি দলীয় নেতা মনে হবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের যদি রাজনীতিতে অংশগ্রহণের স্বীকৃতি থাকে এবং একই সাথে পাঠ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে, মাশরাফীর দোষ কোথায়? আবার সিরিজটি না খেললে তাকে নিয়ে শুরু হবে সমালোচনা।
সাত বার অস্ত্রপচারের পর আর কি দেবার বাকি থাকে? রাজনীতি করার সিদ্ধান্তটাও সবার সেবা দেবার থেকেই উঠে এসেছে। মাশরাফীকে যারা কাছ থেকে চিনেন তারা বলতে পারবেন, মানুষটি কখনও মাথা থেকে চিন্তা করেন না, যা আসে সেটা হৃদয় থেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনি মাঠে নামবেন। সামনে নির্বাচন, তাতে কি? ঠিক আছে অনেক বড় দায়িত্ব। তার নির্বাচনী এলাকা নড়াইল ২ এর উন্নয়নের যাত্রা নির্বাচনী প্রচারণা থেকে শুরু করতে হবে। তিনি কি শুরু করেননি? জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় হয়ে, অধিনায়ক হয়ে তিনি বাংলাদেশকে যেমন আন্তর্জাতিক প্রাঙ্গনে নতুনভাবে পরিচিতি দিয়েছেন, তেমনই তার এলাকায় ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে সংসদে যাবার আগেই তিনি সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সেবা করে আসছেন। জাতীয় ক্রিকেটে তার উপস্থিতি নড়াইলের শোভাবর্ধন করেছে সবসময়। যে খেলা তাকে এত ভালোবাসা ও সম্মান দিয়েছে, তাকে এভাবে ছেড়ে ফিরবেন না খেলা পাগলা মাশরাফী।
কথায় আছে, “গেঁয়ো যোগী ভিখ পায় না।” মাশরাফীর ক্ষেত্রে এমনটি কখনো হয়নি। নড়াইল ১ বলেন আর ২ সবাই ব্যক্তি মাশরাফীকে পছন্দ করে। আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন হয়তো অনেকেই পছন্দ করেননি। যারা মনোকষ্ট পেয়েছেন তার কারণ রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত কিছু না। আর সকলকেই একটি পক্ষ নিতে হয়। তবে নড়াইলে তার নির্বাচনে লড়তে হবে।
এতো চাপ! খেলা-রাজনীতি নিয়ে মাশরাফী কি পারবেন এগিয়ে যেতে? আহতাবস্থায় যে মানুষ বিশ্ব মঞ্চ কাঁপিয়েছে, সে চাইলে পারবেন। পেরেছিলেন ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে যখন বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। প্রিয় খেলা ক্রিকেট ছাড়তে তার যত কষ্ট হবে, রাজনীতিতে অংশগ্রহণে তিনি তত বেশি শক্ত হবেন। এর পেছনের কারণ লোভ। তার প্রতি মানুষের ভালোবাসার লোভ। অন্যেকে নিঃস্বার্থভাবে কিছু দেবার ইচ্ছা। এভাবেই এগিয়ে যাবেন কৌশিক।
রোববার (২৫ নভেম্বর) ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফীর মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। মাশরাফী সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। হয়তো সামনের সিরিজের জন্য অনুশীলন অথবা কোন নীরবতা। ২৬ নভেম্বর নিজ বাড়ি নড়াইলে ফিরবেন মাশরাফী। যদিও মনোনয়ন পত্র গ্রহণের পর মাশরাফীর বাবা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন জানান, আগামী বুধবার (২৮ নভেম্বর) মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হবে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে খেলার কারনে মাশরাফীর নড়াইলে আসার সম্ভাবনা খুবই কম।