ফুটবলার মৌকে হত্যা করা হয়েছে! অভিযোগ পরিবারের

2
11

স্টাফ রিপোর্টার

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় মৌ খাতুন (১৯) নামের এক উদীয়মান নারী ফুটবলারকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ করেছে তার পরিবার। সে পোতাজিয়া ইউনিয়নের রেশমবাড়ি গ্রামের মহির উদ্দিনের মেয়ে।

শাহজাদপুর থানা পুলিশ মৌ খাতুনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা ফজিলাতুনেচ্ছা মুজিব হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গতকাল সকালে নিহত মৌ খাতুনের শশুরবাড়িতে গিয়ে তার স্বামী মোখলেছুর রহমান ও শশুর শাহজাহানের দেখা পাওয়া যায়নি। মৌ খাতুনের শাশুড়ি ও জাঁ এর বক্তব্যে অনেক অসামঞ্জস্যতা ধরা পরে। সারাদিন খোঁজখবর ও মুঠোফোনে তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার আজহার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশের সুরতহালের অবস্থা বর্ণনা করেন। তিনি জানান, মৌ খাতুনের পায়ে কাঁটা ও খত ছিল, ডান হাতে ও থুতনীতে গভীর ক্ষত দেখা গেছে। এতে বোঝা যায়, মৃত্যুর আগে মৌ খাতুন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে। তিনি আরো জানান, গলায় কোন ফাঁস নেওয়ার দাগ অথবা ক্ষত নেই এতে প্রতীয়মান হয় যে, গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি।

বিকালে মৌ খাতুনের বাবার বাড়ি গিয়ে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের দেখা মেলে। বাবা মা ভাই বোন আত্মীয় স্বজন সবার কান্না জড়িত আর্তনাদে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে গেছে। নিহত মৌ খাতুনের বাবা মহির উদ্দিন ও পরিবারের অভিযোগ মৌ এর স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন পুত্রবধুর ফুটবল খেলা পছন্দ করতো না। খেলায় বাধা দিয়ে কাজ না হলে স্বামী ও শশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে মৌ খাতুন কে নির্যাতনের পর হত্যা করে লাশ ডাফের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তাঁরা মামলা করবেন বলেও প্রতিবেদককে জানান।

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রেশমবাড়ি গ্রামের মহির উদ্দিনের মেয়ে নারী ফুটবলার মৌ খাতুনের সাথে একই ইউনিয়নের রাউতরা গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মোখলেছুর রহমান (২২) এর সাথে গত দুই মাস আগে প্রেম করে বিয়ে হয়।

শাহজাদপুর থানার উপ পরিদর্শক বীরঙ্গ চন্দ্র মন্ডল জানান, আমরা খবর পেয়ে বুধবার সকাল ১১ টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই, স্বামী ও শশুড়বাড়ির লোকজন জানায়, রাতের কোন এক সময় স্বামীর অজান্তে গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের ডাফের সাথে ঝুলে সে আত্মহত্যা করে। সুরতহালে মৃত্যু রহস্যজনক মনে হওয়ায় মৌ খাতুনের লাশ থানায় নিয়ে আসি। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাজা গোলাম কিবরিয়া জানান, মৃত্যুর বিষয়ে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। নিহতের পরিবার মামলা করতে চাইলে মামলা নেওয়া হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।