নিউজ ডেস্ক/এমএসএ
আজ ১৭ মার্চ। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি।
দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর জীবন করো রঙিন’ কে সামনে রেখে আজ জাতি যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন করবে। দিনটিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৯৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দোয়া ও মোনাজাতে তাঁরা অংশগ্রহণ করবেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু কিশোর দিবস উপলক্ষে আজ সব সরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বহির্বিভাগে সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হবে। এছাড়া সকল হাসপাতালে মানসম্মত খাবার পরিবেশন করা হবে। শিশু ওয়ার্ডগুলো সাজানো হবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেছে আওয়ামী লীগ। এছাড়া দলের পক্ষ থেকে সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
আজ সারাদিন ধরেই বঙ্গবন্ধুর ভাষণের রেকর্ড বাজানো হবে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে সারা দেশে বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল। জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৯ সালে তিনি তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলীর সদস্য নির্বাচিত হন।
রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যূত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করলেও ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি পাকিস্তানের শাসকেরা। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন। ২৫ মার্চ কালো রাতেই পাক হানাদার বাহিনী নিষ্পাপ বাঙালিদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করার নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালীর বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।