নিউজ ডেস্ক
গত ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৮ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দিবাগত রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মধ্যমবাগ্যা গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চরজুবলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য রুহুল আমিনসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন মাস না পেরোতেই গণ ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারী রুহুল আমিনকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে জামিনের অর্ডারের কাগজপত্র এখনো কারাগারে পৌছায়নি।
সূত্রে জানা যায়, রুহুল আমিন গত ১৮ মার্চ গোপনে হাইকোর্ট থেকে এক বছরের জামিন নেয়। বাদীপক্ষের নোয়াখালী জজ কোর্টের আইনজীবী রবিউল হাসান পলাশ জানান, রুহুল আমিনের জামিনের অর্ডারের কাগজপত্র নোয়াখালীতে আসলেও জেলা কারাগারে পৌছায়নি। কি কারণে জামিনের অর্ডারের কাগজপত্র স্থগিত রয়েছে তা জানা যায়নি।
রুহুল আমিনের জামানতের বিষয় সম্পর্কে অনেকেই অবগত ছিলেন না। নোয়াখালী জেলা কারাগারের জেল সুপার থেকে শুরু করে নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি কেহই তার জামিনের কথা জানতেন না। এদিকে গত ১৮ মার্চ (সোমবার) রুহুলকে জামিনের আদেশ দেন বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় জানান, রুহুলকে জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে। আসামির আইনজীবী মো. আশেক-ই-রসুল রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করে এ জামিন নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে রুহুল আমিনের জামিনের খবরে আতঙ্কিত মামলার বাদী স্বামী সিরাজ মিয়া ও তার গৃহবধূ। তারা বলেন, জেলে থাকা অবস্থা থেকেই রুহুলের লোকজন তাদের হুমকি দিয়ে আসছে, সে ছাড়া পেলে তাদের অবস্থা আরো খারাপ হবে।
উল্লেখ্য, ধর্ষণের শিকার ঐ গৃহিণী অভিযোগ করেছিলেন, ভোটের সময় ধানের শীষে ভোট দেয়া নিয়ে স্থানীয় আ’লীগ নেতা রুহুল আমিন ও তার লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এরপর রাতে রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা (১০-১২ জন) তার বাড়িতে গিয়ে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে তাকে গণ ধর্ষণ ও মারধর করে। এ ঘটনায় নির্যাতিতার স্বামী সিরাজ মিয়া বাদী হয়ে মো. রুহুল আমিনকে প্রধান করে ৯ জনের নামে মামলা করেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিষয়টিতে অবগত হলে সচিবালয়ে বলেছিলেন, অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে শাস্তি তাকে পেতেই হবে। পরবর্তীতে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।