“এ্যাভেঞ্জারসঃ এন্ডগেম”, এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি

20
141

এমএসএ

আগামী ২৬ এপ্রিল ২০১৯ সালের জন্য এক বিশেষ দিন হতে চলেছে। কমিক পাগল ও মুভি প্রেমীদের জন্য দিনটি এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করবে। কারণ এদিন রিলিজ হতে যাচ্ছে মার্ভেল স্টুডিওর ২২তম চলচ্চিত্র “এ্যাভেঞ্জারসঃ এন্ডগেম”। ছবিটির মধ্য দিয়ে মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের ৩য় ফেজ (ধাপ) এর সমাপ্তি হবে। আর এজন্য উৎসুক দর্শক ও ভক্তরা অধীর আগ্রহ নিয়ে প্রহর গুনছেন। যে উপসংহার দিয়ে “ইনফিনিটি ওয়ার” শেষ হয়েছে, যে কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে দর্শকেরা হল, বাসা বাড়ি ছেড়েছে তার শেষ না দেখে তারা কোনভাবেই স্থির হবেন না। ইউনিভার্সের ব্যালেন্স আনতে অর্ধেক প্রাণীকুলকে ধ্বংস করেছে থানোস। এমনকি নিজের সন্তানতুল্য গামোরাকে হত্যা পর্যন্ত করেছে সে। সৌল, মাইন্ড, স্পেস, টাইম, পাওয়ার, রিয়েলিটি সবগুলো স্টোনই থানোসের হাতের মুঠোয়। চাইলেই সে সকল সৃষ্টিকে নিমেষেই অদৃশ্য করে দিতে পারে। যেমন সে করেছিল। “ইনফিনিটি ওয়ারে” স্পাইডারম্যান থেকে শুরু করে ব্লাকপ্যান্থার, ডঃ স্ট্রেঞ্জ, ফ্যালকন, ম্যান্টিল, ড্রাক্সসহ চোখের পলকে বাতাসে মিলিয়ে গিয়েছে অগণিত জীবন।

গত ১৪ মার্চ “এ্যাভেঞ্জারসঃ এন্ডগেম” এর অফিশাল ট্রেইলার রিলিজের পর বুকে এক আশার প্রদীপ জ্বেলে উঠেছে। টেইলারে দেখা যায়, থানোসকে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে সংঘবদ্ধ হচ্ছে এভেঞ্জার্সের বাকি যোদ্ধারা। দলে এসেছে এন্টম্যান, ক্যাপ্টেন মারভেল, হকআই। উইনিভার্সের ছন্দ কি প্রত্যর্পণ বা রিস্টোর করতে পারবে ক্যাপ্টেন আমেরিকা, আয়রন ম্যানে, থর, হাল্কদের এ্যাভেঞ্জারস? শক্তিশালী থানোসের বিপক্ষে সবাই কি বেঁচে ফিরবে? মৃতদের কি পুনর্জ্জীবিত করা সম্ভব হবে? ট্রেইলারে ক্যাপের কণ্ঠে যখন ভেসে ওঠে- “Today we have a chance to take it all back. Whatever it takes” (আজ আমাদের সমস্ত কিছু ফিরিয়ে নেবার সুযোগ রয়েছে। এতে যা কিছু দরকার হোক না কেন) তখন শরীরে এক শিহরণ অনুভূত হয়। বরাবরের মতই মার্ভেল তার দর্শকদের হতাশ করবে না। “এন্ডগেম” এ হয়তো থানোসকে কঠিনভাবে প্রতিরোধ করা হবে, হয়তো সকল চরিত্র তাদের জীবন ফিরে পাবে। কিন্তু সিনেমাটি দিয়ে মার্ভেল জগতে শেষ হবে অনেক জনপ্রিয় অভিনেতার পথচলা- রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, ক্রিস ইভানসসহ অনেকে। এক প্রজন্ম, এক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হবে। ফলে বোঝা যায়, বড় কোন ত্যাগের মধ্য দিয়ে খেলা শেষ হতে চলেছে। নানা লোকের নানা কথা, তত্ত্ব। রিলিজের পরই সত্যটা বেরিয়ে আসবে। এভেঞ্জারসের মত দর্শকও প্রস্তুত সব কিছু মেনে নিতে। “ইনফিনিটি ওয়ারে” প্রায় থানোসকে আটকে দিয়েছিল এভেঞ্জার দল, কিন্তু সব ভেস্তে দিল স্টার লর্ড। আশা করা যায়, এবার প্লান সফল হবে।

ইউটিউবে সিনেমার প্রথম অফিশল ট্রেইলার মুক্তির পর ভিডিওটি চারঘন্টায় দশ লাখ লাইক সংগ্রহ করে রেকর্ড সৃষ্টি করে। একই সাথে অনলাইনে একদিনে সর্বোচ্চ ২৮৪ মিলিয়ন ভিউ সংগ্রহ করে সকল রেকর্ড ভেঙে ফেলে এন্ডগেমের অফিশল ট্রেইলার। প্রযোজক ও মার্ভেল স্টুডিওর পরিচালক কেভিন ফেইজ জানিয়েছেন সিনেমাটির জন্য যে সকল টিজার ট্রেইলার এবং ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে তা কেবলই সিনেমার ৩ শতাংশ পূর্ণ করে। সিনেমার শিরোনামে ব্যবহৃত “এন্ডগেম” শব্দটি ইনফিনিটি ওয়ারে ডঃ স্ট্রেঞ্জের মুখ থেকে শোনা গেলেও, “এইজ অব আল্ট্রনে” টনি স্টার্ক “এন্ডগেম” প্রথম ব্যবহার করে। সিভিল ওয়ার, হোমকামিন, ইনফিনিটি ওয়ারের পর এ্যাভেঞ্জারস এন্ডগেমে স্পাইডার-ম্যান চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে টম হল্যান্ড টবি ম্যাগুইয়র’র রেকর্ড ভাঙতে চলেছে। এর আগে টবি তিনটি সিনেমায় স্পাইডার-ম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেছে। সিনেমার পরিচালক রুশো ভ্রাতৃদ্বয় জানিয়েছেন ছবিটি তিন ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হবে। সম্পূর্ণ সিনেমাটি ডিজিটাল আইম্যাক্স ক্যামেরা দিয়ে ধারণ করা হয়েছে। এর আগে হলিউডের কোন সিনেমায় পূর্ণভাবে আইম্যাক্স ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়নি। ধারনা করা হচ্ছে “এন্ডগেম” এবছরের সব থেকে ব্যবসাসফল সিনেমাগুলোর একটি হবে। এমনকি অতীতের সকল বক্সঅফিস রেকর্ড ভেঙে ফেলার ক্ষমতা রাখে “এন্ডগেম”।

“এন্ডগেম” সিনেমাটি ইনফিনিটি ওয়ারের মত সকলকে আবেগপূর্ণ করবে কিনা বলতে পারছিনা। তবে চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটি একটি অন্যতম সিনেমা হয়ে থাকবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা । একটি কাল্পনিক গল্পকে যেভাবে মার্ভেল ও তার পরিচালকগণ বাস্তবিক রূপ দেয় এবং তা বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে সেটা সত্যি প্রশংসনীয়।