নিউজ ডেস্ক
আজ বুধবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে পবিত্র শবে মেরাজ। মুসলিম বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও কোরআনখানি, নফল নামাজ, জিকির, ওয়াজ, দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে মেরাজ পালন করবে। পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বাদ আসর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ‘লাইলাতুল মেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক এক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
ইসলাম ধর্মানুযায়ী, ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এই লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রজনীতে ঐশ্বরিক উপায়ে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত মুহাম্মদের (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির একাদশ বৎসরের (৬২০ খ্রিষ্টাব্দ) রজব মাসের ২৬ তারিখের দিবাগত রাতে হযরত জিব্রাঈল (আ.)-এর সঙ্গে পবিত্র কাবা হতে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস/মসজিদুল আকসা হয়ে সপ্তাকাশের উপর আরশে আজিমে মহান আল্লাহর সাথে দেখা করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে ফিরে আসেন।
আল্লাহ্ তাআলা বলেন: “পবিত্র মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রিকালে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসাতে ভ্রমণ করিয়েছেন; যে মসজিদের চারপাশে আমরা বরকত দিয়েছি; যাতে করে আমরা তাকে আমাদের নিদর্শনাবলি দেখাতে পারি। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।”(সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ১)
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মুতাওয়াতির সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তাঁকে আসমানের দিকে ঊর্ধ্বে মিরাজ করানো হয়েছে। তাঁর জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে; এমনকি তিনি সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়েছেন। এরপর তাঁর রব্ব তাঁর সাথে যা ইচ্ছা কথা বলেছেন এবং তাঁর উপর নামায ফরয করেছেন। প্রথমে আল্লাহ্ তাঁর উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরয করেন। কিন্তু, তিনি আল্লাহ্র কাছে নামায কমানোর জন্য বারবার ধর্ণা দেন; এক পর্যায়ে নামায পাঁচ ওয়াক্তে স্থির করা হয়। ফরয দায়িত্ব বা আবশ্যকীয় দায়িত্ব হিসেবে নামায পাঁচ ওয়াক্ত। কিন্তু, প্রতিদানের ক্ষেত্রে এটি পঞ্চাশ ওয়াক্ত। কেননা, এক নেকীতে দশ নেকীর সওয়াব রাখা হয়েছে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য। যাবতীয় নিয়ামতের জন্য তাঁরই শুকরিয়া।
আবার অনেক মুসলমান এই রাত উদযাপন করেন না বরং এই রাত উদযাপন করাকে বিদআত বলেন। তারা মিরাজের তাৎপর্য উপলব্ধি করে মনে করেন, যে রাত্রিতে মেরাজ সংগঠিত হয়েছে সে রাত্রিকে সুনির্দিষ্ট করে কোন হাদিস বর্ণিত হয়নি; না রজব মাসের ব্যাপারে; আর না অন্য কোন মাসের ব্যাপারে। সে রাত্রিকে নির্দিষ্ট করে যে সব বর্ণনা উদ্ধৃত হয়েছে সে বর্ণনাগুলোর কোনটি হাদিস বিশারদদের নিকট নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত নয়। সে রাত্রিটিকে সুনির্দিষ্ট করণ থেকে মানুষকে ভুলিয়ে দেয়ার মধ্যে আল্লাহ্ তাআলার মহান কোন হেকমত নিহিত রয়েছে।