নিজস্ব প্রতিবেদক
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গণহত্যা দিবস ২৩ মে। ১৯৭১ সালের ২৩ মে ভোরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামে ৩৯ মুক্তিকামী মানুষকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে পাকহানাদার বাহিনী। বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। বিষাদময় সেইদিনের কথা মনে করে এ অঞ্চলের মানুষ আজও আতকে উঠেন। চোখের জ্বলে বুক ভাসান স্বজনেরা।
গণহত্যার শিকার ফেলু শেখের স্বজনেরা জানান, ২৩ মে ভোরে ফেলুসহ ইতনার মুক্তিকামী ৩৯জনকে নিরহ মানুষকে পাকসেনারা গুলি করে হত্যা করে। সেদিনের সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞের কথা ভোলার নয়। আতিয়ার শেখের পরিবারের সদস্যরা জানান, এইদিনে (২৩ মে) সরকারি উদ্যোগে কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় না। এছাড়া কবরগুলো চিহিৃতকরণসহ কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। তবে, ইতনা গণগ্রন্থাগারের পরিকল্পনায় এবং শেখ সিরাজ ইশতিয়াক আফছার উদ্দিন ট্রাস্টের সহযোগিতায় ১৯৯৪ সালের ২৩ মে ইতনা স্কুল ও কলেজের পাশে ৩৯ জনের ‘নামফলক’ স্থাপিত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ১৯৭১ সালের ২৩ মে হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন ইতনা গ্রামের শেখ হাফিজুল হক হিরু মিয়া, সৈয়দ শওকত আলী, সৈয়দ কাওছার আলী, সৈয়দ এসমত আলী, সৈয়দ মোশাররফ আলী, শেখ তবিবর রহমান তবি, সিকদার ওয়ালিয়ার রহমান, সিকদার হাবিবুর রহমান, মোল্যা মকলেসুর রহমান, রাশেদ গাজী, বাদল শেখ, বানছারাম মন্ডল, হারেজ ফরির, তরু মিনা, হেমায়েত হোসেন, রবি মোল্যা, আব্দুস সামাদ মোল্যা চুন্নু, পাচু মিয়া খদগির, মতলেব শেখ ওরফে কালমতে, নালু খাঁ, শেখ রফিউদ্দিন লেংটা, নুরুদ্দিন শেখ, কেয়ামদ্দিন ওরফে কিনু ফকির, মির্জা মোবারক হোসেন, নুরু মোল্যা, কুটি মিয়া মোল্যা, কানাই স্বর্ণকার, মোল্যা আব্দুর রাজ্জাক, মোল্যা সফিউদ্দিন আহমেদ, মোল্যা মানসুর আহম্মেদ, মালেক শেখ, শিকাদার হাদিয়ার রহমান, নবীর শেখ, ফেলু শেখ, মোহন কাজী ওরফে পাগলা কাজী, আতিয়ার শেখ, জহির শেখ, ছরোয়ার রহমান লেংটা ও বাকু শেখ। এদিকে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ইতনা গ্রামে আরো ১১ জন শহীদ হন। এরা হলেন-শিকদার হেমায়েতুল ইসলাম ধলু, অতুল পাল, পেনু ঘোষ, শেখ আতিয়ার রহমান খোকা, মির্জা রফিকুল ইসলাম, সরদার সামসুর রহমান বাঁশি, মিনা আব্দুর রাজ্জক, ছরোয়ার রহমান ভূঁইয়া, আতিয়ার রহমান ভূঁইয়া, হাসেম শেখ ও এসএম রেজাউল ইসলাম। এদিকে, ২৩ মে ইতনা গণহত্যার স্মরণে পারিবারিক ভাবে এবং গ্রামবাসীর আয়োজনে কবর জিয়ারত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।