নিউজ ডেস্ক
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সবাই ছুটে নাড়ির টানে, বাড়ির পানে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষই ছুটে চলে গ্রামের পথে। এবারও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কর্মসহ নানা সূত্রে শহরে বসবাসরত মানুষজন সপরিবারে ছুটতে শুরু করেছে বাড়ির দিকে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের আনন্দ বিষাদে রূপ নিক, তা কারো কাম্য নয়। আমরা চাই, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন হোক। প্রকৃত আনন্দ নিয়েই বাঙালির প্রতিটি ঘরে আসুক ঈদ। ঈদ হোক সবার জন্য আনন্দময় উৎসব, মিলনমেলা। আসুন সকলে সাবধানে দেখে সুনে সতর্কতার সাথে ঈদ যাত্রা করি। সকলের সক্রিয় প্রচেষ্টায় আশা করি সবার ঈদ যাত্রা হবে নিরাপদ। নিসচা চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বিকাল ৫টায় তার নিজস্ব ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভে আসেন। এবং সেখানে তার অগনিত ভক্ত নিসচা কর্মি ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এসব সতর্কতামুলক বক্তব্য প্রদান করেন।
লাইভে এসে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ঈদ মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব। জীবিকার তাগিদে মানুষ কর্মস্থলে অবস্থান করলেও প্রতি ঈদে শিকড়ের টানে ফেলে আসা আপনজনদের কাছে পেতে ছুটে যায় গ্রামে। তাই বিপুল সংখ্যক মানুষ একসাথে গন্তব্য যাওয়ায় সড়ক পথে মানুষের চাপ বাড়ে বহুগুনে ,ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বহুগুণ যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বাড়ায় অনেকটা নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পরে সড়ক ব্যবস্থা। স্বল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক যাত্রীকে গন্তব্য পৌছাতে গিয়ে অসর্কতা ও অসচেতনতার কারণে দুর্ঘটনার ঘটছে, যার কারণে বিপুল মানুষ এই সময়টিতে প্রাণ হারান। শুধু মাত্র চালক, মালিক, শ্রমিকদের ও যাত্রীদের অসতর্কতা এবং অবহেলার কারনেই দুর্ঘটনা গুলি ঘটছে। তাই আমাদের মূল্যবান প্রাণ বাঁচাতে প্রয়োজন সতর্কতা ও সচেনতা। আমরা যদি একটু বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করি তাহলে দেখবেন অনেক ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। যেমন একসাথে পরিবারের সকলে ভিরের ভেতর যাত্রা না করে কিছু সদস্যকে আগে বাড়ি পাঠিয়ে দিলে ঈদের এই সময়টাতে ভির এর যন্ত্রনা থেকে অনেকটা মুক্ত হওয়া যায়। তিনি সকলকে একসাথে যাত্রা না করে পরিবারের সদস্যদের প্রযোজনে আলাদা আলাদা ভাবে আগে পরে যাত্রা করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও ইলিয়াস কাঞ্চন সড়ক দুর্ঘটনা গুলোর পেছনের কারণ হিসেবে কিছু বিষয় তুলে ধরেন এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে কথা বলেন।
তিনি জানান, চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মনোভাব বা অনিয়ন্ত্রিত গতি সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রবণতা, স্বল্প সময়ে অধিক ট্রিপ দেওয়ার প্রবণতার কারণে অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। তাই অনিয়ন্ত্রিত গতিতে গাড়ি চালানো উচিত নয়। দূরযাত্রার ক্ষেত্রে চালকের বিশ্রাম না নেওয়া বা বিশ্রাম না নিয়ে একাধিক ট্রিপ দেওয়ার কারণে অনেক সময় ক্লান্ত পরিশ্রান্ত বা ঘুম, ঘুম ভাব নিয়ে গাড়ী চালিয়ে থাকে যার কারণে একসময় নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। তাই চালকের সঠিক ঘুম ও বিশ্রাম অত্যান্ত জরুরী।তিনি সকল চালকদের আহবান জানান ঈদের সময় দয়া করে সকলে সাবধানে গাড়ি চালাবেন। আপনাদের ওপর নির্ভর করছে যাত্রীদের ঈদের হাসি।
তিনি আরো বলেন, ঈদের সময় অধিক সংখ্যক যাত্রী পরিবহনে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যায়। তাই অধিক সংখ্যক ড্রাইভার প্রয়োজন পরে। তাই বাস মালিকগণ এই চাহিদা মেটাতে আধাদক্ষ ,অদক্ষ ড্রাইভার নিযুক্ত করেন। তাদের মহাসড়কে গাড়ী চালানোর অভিজ্ঞতা না থাকায় ,নিয়মনীতি না জানায় দুর্ঘটনা ঘটায়। ইলয়াস কাঞ্চন গাড়ির মালিকদের প্রতিও আহবান জানান তারা যেন যার তার হাতে গাড়ি দিয়ে সড়কে বিশৃংখলা সৃস্টি না করেন।
ইলয়াস কাঞ্চন যাত্রীদের বলেন, ঈদে বাসের ছাদে বা ট্রাকে যাত্রী হয়ে যাওয়া উচিত নয় কারণ মুখোমুখি সংঘর্ষে বেঁচে থাকার সম্ববনা ক্ষীণ থাকে এছাড়াও সামান্য দুর্ঘটনাতে ছাদ থেকে ছিটকে পড়ে অধিক হতাহত হয়। তিনি বলেন জীবনের ঝুঁকি হয় এমনটা জেনে কখনোই ভ্রমন করবেন না। ঈদ এ বাড়ি যাওয়া প্রয়োজন ঠিক আছে কিন্তু জেনে সুনে ঝুঁকি নিয়ে যেতে গিয়ে জীবন হারানোর কোন প্রয়োজন নেই। তিনি যাত্রীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, গাড়ি চালাতে গিয়ে চালকগণ মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটে যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটায়। তাই গাড়ি চালানোর সময় কোন চালক মোবাইলে কথা বললে তাদের আপনারা নিজ দায়িত্ব নিয়ে নিশেধ করুন।
ইলিয়াস কাঞ্চন সকলকে বলেন, ঈদ যাত্রায় সচেতন ও সতর্ক থাকুন এই সতর্কতায় আপনাকে নিরাপত্তা দেবে। তিনি আরো বলেন, আর কয়েক ঘন্টার পর শুরু হবে পবিত্র লাইলাতুল কদর। মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আজ দিবাগত রাতে মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। এ রাতে মুসলমানগণ নফল নামাজ আদায়, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন। অর্থাৎ যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে আজ শনিবার ১ জুন দিবাগত রাতে সারা দেশে পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর পালিত হবে। আসুন এই রাতে আমরা সকলে সকলের জন্য আল্লাহব কাছে দোয়া করি। ঈদে যেন সবার পরিবারের মানুষগুলো নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে। কারো জীবনহানী যেন সড়কে না হয়। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা আমাদের দোয়া কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। সূত্রঃ নিরাপদ নিউজ