ডেস্ক রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ২০ এর অধিক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও তার সহায় প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় প্রেরণ করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এই মামলা দু’টি দায়ের করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল আরিফের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন স্কুলের নির্যাতিত সকল ছাত্রীর পরিবার। এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপর মামলাটি দায়ের করে র্যাব। র্যাবের মামলাটিতে অনৈতিক কাজে সাহায্য করার অপরাধে প্রধান শিক্ষককেও আসামি করা হয়। পরে র্যাব-১১ কার্যলয়ে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হাজতে আসামীদের প্রেরণ করা হয়।
সূত্রে জানা যায়, গত ৮ বছর ধরে অক্সফোর্ড হাইস্কুলে গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা করে আসছে সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলাম। অনেক দিন ধরেই কিছু ছাত্রীদের ব্ল্যাকমেইল করে তাদের উপর যৌন নির্যাতন চালাতে থাকে আরিফ। ছাত্রীদের কোচিং পড়নোর জন্য নিজ বাসাসহ স্কুলের পাশে বুকস গার্ডেন এলাকায় আরিফুল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করেন। সেখানেও জোর করে ছাত্রীদের সাথে অনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে থাকে আরিফ। তার চরিত্র ও আচরণ নিয়ে এলাকায় প্রচার হতে থাকলে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় স্কুলে ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে নিজের মোবাইলে থাকা আপত্তিকর ছবিগুলো মুছে ফেলে আরিফুল (এই ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সে ছাত্রীদের ও তাদের অভিভাবকদের ব্লাকমেইল করতো)। কিন্তু মোবাইল উদ্ধার করে স্থানীয় একটি মোবাইল দোকানে নিয়ে একটি সফটওয়ারের মাধ্যমে ছবিগুলো উদ্ধার করে এলাকাবাসী। এরপর তারা স্কুল ঘেরাও করে শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে গণপিটুনি দেয়।
ঘটনাস্থল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজি এলাকায় অবস্থিত অক্সফোর্ড হাইস্কুলে এসে আরিফুলের মোবাইল থেকে ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অনেক ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর তার মোবাইলও জব্দ করে র্যাব। পরবর্তীতে আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকে গ্রেফতার করে র্যাবের কার্যলয়ে নিয়ে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত শুরু করা হয়। র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলেপ উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে ঐ শিক্ষক স্বীকার করেছেন তিনি ২০ জনের অধিক ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে ‘ধর্ষণ’ করেছেন। আর তার সব অপরাধ কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করতেন প্রধান শিক্ষক জুলফিকার।
তিনি আরো বলেন, আটককৃত শিক্ষক আশরাফুল আরিফের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ বিষয় স্বীকার করেছে। বিস্তারিত তথ্য উদঘাটনের জন্য তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।