স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল শহরের রূপগঞ্জ বাস কাউন্টারে যশোর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির অধীনে কলারম্যান হিসেবে কাজ করেন মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শেখ। সদা হাসিখুশি এই মানুষটি সামান্য বেতনে চাকুরী করেও আদরের দুটি কন্যাকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চান।
ইতিমধ্যে সেই স্বপ্ন যেন পূরণ হতে চলেছে। বড় মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জেরিন এবছর নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজ হতে বাণিজ্য বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়েছে। মেয়ের এই সাফল্যে বাবা জাহাঙ্গীর শেখ যেন খুশিতে আত্মহারা। পরিচিত যাকে দেখছেন, তাকেই মেয়ের এই সাফল্যের কথা জানাতে ভুলছেন না। কাউন্টারে বসে মিষ্টি খাওয়ানোর পরিবেশ না থাকলেও এক কাপ চা ও একটি বিস্কুট খাওয়াতে না পারলে যেন তৃপ্তি পাচ্ছেন না স্বপ্নচারী এই বাবা।
জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, জীবনে যত কষ্টই হোক না কেন দুটি মেয়েকে মানুষের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। ছোট মেয়ে লামিয়া আক্তার জিম নড়াইল শিবশংকর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। জাহাঙ্গীর আলমের দেশের বাড়ি ঢাকা বিভাগে হলেও তিনি চাকুরীর সুবাদে অনেক বছর আগে নড়াইলে এসেছেন। তাই নড়াইলকে ভালবেসে এখানেই জীবন কাটাতে চান। স্ত্রী রিনা বেগম গৃহিনী।
মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস জেরিন জানান, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে অনেকেই মোবাইল ও ফেসবুক ব্যবহার করলেও ভাল ফলাফলের প্রত্যাশায় সে কখনোই মোবাইল বা ফেসবুক ব্যবহার করেনি। ফেসবুকে কোন আইডিও নেই তার। বাবা মায়ের অনুপ্রেরণা ও শিক্ষকদের আন্তরিকতার কারনেই ভাল ফলাফল সম্ভব হয়েছে। ২০১৭ সালে নড়াইল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে ৪.৫৫ পয়েন্ট পেয়ে এসএসসি পাশ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও বাবার সামান্য বেতনের কথা ভেবে নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজেই ভর্তি হওয়ার কথা ভাবছে। পড়াশোনা শেষ করে ভবিষ্যতে ভাল কোন চাকুরী করে বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোঁটাতে চায় জেরিন। সে সকলের দোয়া প্রার্থী।