স্টাফ রিপোর্টার
মাদারীপুর কাঠালবাড়ি ১নং ফেরিঘাট থেকে ভিআইপির অজুহাতে তিন ঘন্টা বিলম্বে ফেরি ছাড়ায় স্কুল ছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর সংবাদটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার কারণে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক গঠিত দু’টি তদন্ত টিম নড়াইলের কালিয়ায় পৃথক পৃথকভাবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত তদন্ত করেছে।
অপরদিকে তদন্ত চলাকালীন সময় তিতাস ঘোষের মৃত্যুর সুষ্ঠূ তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবী করে মিছিল করে কালিয়া সরকারী কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীসহ সর্বস্তরের মানুষ। পরে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুদার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।
সকাল ১০টায় অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিকের নেতৃত্বে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত ৩সদস্যের তদন্ত কমিটি কালিয়ার ইউএনওর কার্যালয়ে পৌঁছালে সেখানে স্থানীয় সর্বস্তরের মানুষের ভিড় জমে। তদন্ত কালে তিতাসের মা সোনামনি ঘোষ ও বোন তনিষা ঘোষ, মামা অশোক ঘোষ, অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ডাক্তার, নার্স, ড্রাইভার, মৃত তিতাস ঘোষের অন্যান্য আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এরপর দুপুর ২টার দিকে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ কর্তৃক অতিরিক্ত সচিব মোঃ রেজাউল আহসানের নেতৃত্বে গঠিত ৩সদস্যের তদন্ত কমিটিও একই ভাবে তিতাসের স্বজনদের শুনানী গ্রহণ করেন। শুনানী শেষে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান সঞ্জয় কুমার বনিক বলেন, ‘আমরা তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। শুনানী শেষে যাচাই বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’
অপরদিকে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মোঃ রেজাউল আহসান বলেন, ‘তদন্ত কাজ চলছে। তদন্ত শেষে রির্পোট জানা যাবে।’ প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুলাই তিতাস একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় পরদিন ২৫ জুলাই তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে ওইদিন রাত ৮ টায় কাঠালবাড়ি ১ নম্বর ফেরীঘাটে পৌঁছালে তারা জানতে পারে নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের একজন ভিআইপির অপেক্ষায় ফেরী চলাচল বন্ধ রয়েছে। তিতাসের বোন তনিষা ঘোষ তার ভাইয়ের আশংকাজনক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি সেখানকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীসহ বিভিন্ন মহলে ধরণা দিয়েও কোন কাজ হয়নি। রাত ১১টার দিকে ওই ভিআইপির গাড়িটি আসার পর ফেরী চলাচল শুরু হয়। কিন্তু ফেরী পার হতে না হতেই তিতাস বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।