স্পোর্টস ডেস্ক/এমএস
দুই বছরের জন্য সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে তিনি নি’ষিদ্ধ! সাকিব আল হাসান! যিনি বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন! বিষয়টি আইনগতভাবে গৃহীত হলেও সাকিব ভক্ত ও দেশবাসীর কাছে এটি মোটেও সুখকর নয়। কারণ এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে যেন এক অপ্রকৃষ্ট অধ্যায় রচনা হতে চলেছে।
অ’পরাধ ও শা’স্তি দুটোই মেনে নিয়েছেন ক্রিকেটের এই জীবন্ত কিংবদন্তী। প্রথম এক বছরের নিষে’ধাজ্ঞা কা’টানোর সময়ে নতুন করে কোনো আইন না ভা’ঙলে পরবর্তী এক বছরের শা’স্তি থেকে তিনি মুক্তি পাবেন। সাকিবকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে নেই। নিজের দো’ষ স্বীকার করে নেয়ায় তো তিনি অপ’রাধী? তবে তার জন্য এত কেন সা’ন্ত্বনা? এত কেন ভালোবাসা? হয়তো, প্রতিদান। দেশের ক্রিকেটে তার যে অবদান তা অকল্পনীয়। নিজের অনবদ্য পারফরমেন্স দিয়ে দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যিনি সর্বাধিক পরিচিতি দিয়েছেন তার প্রতি কোন কৃতজ্ঞতা থাকবে না? সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে সতীর্থ মুমিন, মুশফিকসহ কোটি ভক্তের প্রোফাইলে সাকিবের জন্য আ’র্তনাদ। সাকিবের এই ক’ষ্টের সারথি হয়েছেন স্বয়ং জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ও নড়াইল ২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।
২২ গজে দুজনের সম্পর্ক ১৩ বছরের। দু’জনেই দেশের জন্য হাল ধরেছেন। আজ সাকিবের এমন পরিস্থিতিতে ম’র্মাহত মাশরাফী। ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড পেইজের পোস্টে তিনি লেখেন, “দীর্ঘ ১৩ বছরের সহযো’দ্ধার আজকের ঘটনায় নিশ্চিতভাবেই কিছু নিদ্রাহীন রাত কাটবে আমার। তবে কিছুদিন পর এটা ভেবেও শান্তিতে ঘুমাতে পারব যে, তার নেতৃত্বেই ২০২৩ সালে আমরা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলব। কারণ নামটি তো সাকিব আল হাসান…!!!”
আইসিসি জানায়, ২০১৮ এর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসের মধ্যে তিন বার সাকিবের কাছে ম্যাচ ফি’ক্সিংয়ের প্রস্তাব আসে। কোনোবারই এ বিষয়ে আইসিসিকে কিছু জানাননি তিনি। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটির দুর্নীতি বিরো’ধী ধারা অনুযায়ী, কারও কাছ থেকে অনৈতিক কিছুর প্রস্তাব পেলে যত দ্রুত সম্ভব আইসিসি বা সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাতে হয়। প্রতিটি সিরিজের আগে ক্রিকেটারদের ক্লাস নিয়ে এ নিয়ম মনে করিয়ে দেওয়া হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। অ’পরাধের মাত্রা অনুযায়ী, এই ধারা ভ’ঙ্গের শা’স্তি সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের নিষে’ধাজ্ঞা।
শা’স্তি মেনে নিয়ে সাকিব প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “আমার ভালোবাসার খেলাটি থেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় আমি অত্যন্ত বিষ’ণ্ণ। তবে (আইসিসিকে) রিপোর্ট না দেয়ায় আমার বিরু’দ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে সেটা আমি মেনে নিচ্ছি। দুর্নীতির বিরু’দ্ধে ভূমিকা পালনের জন্য আইসিসির এসিইউ খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রাখে। কিন্তু আমি এক্ষেত্রে আমার দায়িত্ব পালন করতে পারিনি।”
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটার এবং ফ্যানদের মতো আমিও চাই দু’র্নীতিমুক্ত ক্রিকেট। আমি আইসিসির এসিইউ টিমের শিক্ষা প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে তাদের সহযোগিতা করতে চাই এবং আমি যে ভুলটি করেছি তা যেন আর কোনো তরুণ ক্রিকেটার না করেন সেটি নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করতে চাই।
অতীতে দেশ ও ক্রিকেটের জন্য সাকিব একাধিকবার প্রমাণ দিয়েছেন। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা, সংকল্প, অধ্যবসায়, ইচ্ছা শক্তি কোনটাতেই তার কম ছিলো না। এরপরেও তিনি অপরাধী। ম্যাচ ফি’ক্সিং না করেই ভুল সিদ্ধান্ত নেয়ায় তাকে এক বছরের মা’শুল দিতে হচ্ছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে বৈধ রায়কে অনৈ’তিক মনে হতে পারে। যাই হোক না কেন আল্টিমেট সাকিবের জন্য অপেক্ষা করবে দেশবাসী। ৭৫নং জার্সিতে ২২ গজে তাকে ফিরতে হবে। সাকিবের নেতৃত্বেই ২০২৩ সালে বাংলাদেশ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলবে।