৮ ডিসেম্বর লোহাগড়া হানাদার মুক্ত দিবস

3
158

স্টাফ রিপোর্টার

লোহাগড়া হানাদার মুক্ত দিবস আজ (৮ ডিসেম্বর) । মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করে পাক হানাদার মুক্ত করেন। সর্বত্র উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। স্বঃতস্ফুর্ত বিজয় উল্লাসে হাজার হাজার মুক্তিপাগল জনতা রাস্তায় নেমে আসে।

১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের শুরুতেই লোহাগড়া থানার অধিকাংশ এলাকা পাক হানাদার মুক্ত হয়। এ সময় স্থানীয় রাজাকাররা থানায় আশ্রয় নেয়। পুলিশ এবং স্থানীয় রাজাকার মিলে থানা অভ্যন্তরে অস্ত্র ও গোলাবারুদের বিশাল মজুদ গড়ে তোলে। নভেম্বরে মাঝামাঝি মুক্তিযোদ্ধারা লোহাগড়া থানা আক্রমনের চুড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহন করে। এ জন্য তৎকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ খসরুজ্জামানের উপস্থিতিতে ২ ডিসেম্বর নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা বাবু মীরের বাড়িতে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। বৈঠকে গ্রুপ কমান্ডার ইমান আলী, ওয়ালিয়ুর রহমান, নুরমিয়া সহ ৩০-৩৫ জন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে, মাকড়াইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির হোসেনের নেতৃত্বে কমান্ডার শেখ ইউনুস আলী, লুৎফর বিশ্বাস, আবুল হোসেন খোকন, রেজাউল করিম রেজা খান, শেখ আব্দুল মান্নান ও খানজাহান খান খাজাসহ ৪০-৪৫ জনের একদল মুক্তিযোদ্ধা গোপন বৈঠকের মাধ্যমে লোহাগড়া থানা আক্রমনের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ৮ডিসেম্বর ফজরের আযানের সাথে সাথে শরীফ খসরুজ্জামানের নেতৃত্বে দেড় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ৪ ঘন্টা ব্যাপী গেলিরা যুদ্ধের মাধ্যমে লোহাগড়া থানা আক্রমন করেন। এতে পাকহানাদার বাহিনী পরাস্ত হয়ে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। থানা আক্রমনের সময় পাক র গুলিতে উপজেলার কোলা গ্রামের সরদার হাবিবুর রহমান ও যশোর সদর উপজেলার জঙ্গল বাঁধাল গ্রামের মোস্তফা কামাল থানা চত্বরে শহীদ হন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ২২ জন পাকহানাদার বাহিনী ও পুলিশসহ স্থানীয় রাজাকাররা আটক হয়। পরে শহীদ হাবিবুর রহমানকে লোহাগড়া থানায় এবং শহীদ মোস্তফা কামালকে ইতনা স্কুল এন্ড কলেজ চত্তরে দাফন করা হয়।

লোহাগড়া মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রোববার দিনব্যাপি নানা কর্মসুচির আয়োজন করেছে। কর্মসুচীর মধ্যে রয়েছে পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, বর্ণাঢ্য র‌্যালী, শহীদ হাবিবুর রহমান ও মোস্তফা কামালের কবর জিয়ারত, আলোচনা সভা ও মিলাদ মহফিল।