স্টাফ রিপোর্টার
“ধনী গরিব ভেদাভেদ ভুলে, আমরা সমান সম্মানিত সকলে” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে, দলমত নির্বিশেষে, বিপদে আপদে একে অপরের পাশে দাড়ানোর প্রত্যয়ে নড়াইলে বসবাসকারী কামাল প্রতাপ কল্যাণ সমিতির যাত্রা শুরু হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় “মিলন মেলা” কামাল প্রতাপ কল্যাণ সমিতির ব্যানারে একটি বর্ণ্যাঢ্য র্যালি শহরের শিল্পকলা থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে একই স্থানে শেষ হয়। পরে নারী শিশু পুরুষের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। নেচে গেয়ে আনন্দে মাতোয়ারায় দিনপার করে সকলে।
এ প্রসঙ্গে আয়োজক কমিটির সদস্য হিরন্ময় বিশ্বাস বলেন, আমরা কামাল প্রতাপ গ্রামের অনেকে নড়াইল শহরে বাড়ি করে ও বাসা ভাড়া বসবাস করি কিন্তু একে অপরের সাথে বা আমাদের ছেলে মেয়েদের সাথে পরিচয় নাই কোন সম্পর্ক নাই। কেউ কাউকে চিনেনা। তাই সকলে সকলকে চিনবে বিপদে পাশে দাড়াবে সেই লক্ষে এই উদ্যোগ। এখানে কোন রাজনীতি থাকবেনা।যে যে দল করুকনা কেন তাতে কিছু যাবে আসবেনা। নড়াইলে বসবাসকারী কামাল প্রতাপ গ্রামের স্বার্থে আমরা একমত। এ উদ্দেশ্যে একটি স্বরণিকা ম্যাগাজিন বের করা হচ্ছে যাতে থাকছে সকল পরিবার ও সদস্যদের নাম ঠিকানা ছবি মোবাইল নম্বর যা দেখে সকলে সকলের সাথে তাৎক্ষনিত ফোনে যোগাযোগ করে যে কোন সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে পারবে।
খন্দকার আবু মুছা বলেন, আমরা এবারে ৬০ পবিারের সাথে যোগাযোগ করতে পেরেছি যার সদস্য সংখ্যা ২০০ জন। এ বছর স্বল্প পরিসরে এ আয়োজন করলেও আগামীতে বড় আকারে এবং নড়াইলের বাহিরে যে কোন গুরত্বপূর্ণ স্থানে গিয়ে বড় পরিসরে আয়োজন করতে চেষ্টা করবো।
আলমগীর জোমাদ্দার বলেন, আমি চাকুরী থেকে অবসর নিয়ে নড়াইলে বাড়ি করে বসবাস করছি। বাড়ি করার সময় নানান সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম এবং গ্রাম থেকে আমার বংশের ও আত্মীয় স্বজনেরা এসে সমস্যার সমাধান করেছিল। এবার আমরা যারা নড়াইলে বসবাস করি তারা যদি এ রকম একতাবদ্ধ থাকি তাহলে নিজেরাই সব সমস্যার সমাধান করতে পারবো। আমাদের গ্রামের অন্য কেউ যদি বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয় তাহলে আর গ্রাম থেকে লোকবল আসা লাগবেনা। নড়াইলে বসবাসকারী আমরাই মোকাবিলা করতে পারবো।
খন্দকার সাইফুল ইসলাম বলেন আমার বোন ভগ্নিপতি নড়াইলের সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের মহিলা হোস্টেলের পশ্চিম পার্শে দোতলা ভবন তৈরি করতেছে। উক্ত কাজে এক সন্ত্রাসী বাঁধা দিচ্ছে। আমরা যদি একতাবদ্ধ থাকি তাহলে মাস্তানি করতে পারবেনা।
বঙ্গবন্ধুর আত্মীয় কাজী হাফিজুল করিম শিল্পী বলেন, কামাল প্রতাপ গ্রামে অনেক ক্ষমতাধর ব্যাক্তি থাকা সত্বেও গ্রামের কোন উন্নতি হয়নি। এবারে আমি উদ্যোগ নিয়ে সাংবাদিকদের এলাকায় নিয়ে কামাল প্রতাপের উন্নয়ন দাবী করে নিউজ প্রকাশ করলে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা মহোদয় বঙ্গবন্ধুর ফুফুবাড়ী কামাল প্রতাপ হওয়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে গ্রামে যাওয়ার রাস্তাঘাট স্কুল স্কুলমাঠের উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এজন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে কামাল প্রতাপ কল্যান সমিতির আমরা কৃতজ্ঞ।
জাহানারা লাকি বলেন, অনেক আগে থেকেই আমার সামর্থ্য অনুযায়ী কামাল প্রতাপ গ্রামের লোকেদের চিকিৎসাসহ যে কোন বিপদে আপদে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকি। এখান থেকে নড়াইলে বসবাস করে গ্রামের অনেক লোককে চিনলাম। আমার এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এ্যাডভোকেট ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ বলেন, আমি ব্যাক্তিগত ভাবে অনেক আগে থেকেই গ্রামের লোকজনের বিপদে আপদে পাশে দাড়াই। নড়াইলে বসবাসকারীরা যদি একতাবদ্ধ হযে কামাল প্রতাপ কল্যাণ সমিতি নামের সংগঠন করি তাহলে যে কোন সমস্যার মোকাবেলা করতে সহজ হবে। আমি নড়াইলে বসবাসরত বাসিন্দাদের যে কোন সমস্যায় সহযোগিতা করবো।
এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সাবেক সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা আহম্মেদ ফজলুর রহমান মুরাদ হোসেন বলেন, কামাল প্রতাপ গ্রাম নড়াইলের এতিহ্যবাহী শিক্ষিত গ্রাম।এখানে অনেক গুনিজনের জন্ম যারা নড়াইল সহ দেশ বিদেশে দাপটের সাথে বসবাস করে।কিন্তু গ্রামের কল্যানের কথা ভাবেনি। আশা করি এখন থেকে কামাল প্রতাপ কল্যাণ সমিতি নামের সংগঠন ভালো করবে।