পরিবারের বিমুখতা, করোনায় দুই শতাধিক মৃ*তকে দা*ফন করেছে কোয়ান্টাম

3
18
পরিবারের বিমুখতা, করোনায় দুই শতাধিক মৃ*তকে দা*ফন করেছে কোয়ান্টাম
পরিবারের বিমুখতা, করোনায় দুই শতাধিক মৃ*তকে দা*ফন করেছে কোয়ান্টাম

ডেস্ক রিপোর্ট

কো’ভিড-১৯ আক্রা*ন্ত বা স*ন্দেহভাজন সারাদেশে দুই শতাধিক ম*রদে*হ ক্ষেত্রবিশেষে দাফ*ন এবং সৎ*কার করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। গত ৭ এপ্রিল থেকে কোয়ান্টামের তিন শতাধিক নিবেদিতপ্রা*ণ স্বেচ্ছাসেবক দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এ সেবাকাজে নিয়োজিত রয়েছেন। করোনা অাত*ঙ্কে পরিবারের সদস্যরা যখন লা*শ ফেলে পা*লিয়ে যাচ্ছেন বা ভ*য়ে আত*ঙ্কে দূরে থাকছেন; তখন ম*রদে*হের শেষ বিদায় জানাতে মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির একদল স্বেচ্ছাসেবক।

কোয়ান্টামের দাফ*ন কার্যক্রমের সমন্বয়ক ছালেহ অাহমেদ জানান, গত ৭ এপ্রিল থেকে আমরা দা*ফন কার্যক্রম শুরু করি। ২১ মে পর্যন্ত সারাদেশে আমরা ২০৪ জন মৃ*তদে*হ দা*ফন ও সৎ*কার করেছি। এর মধ্যে ঢাকায় ১৭১ জন ও বাকিরা রাজশাহী, বরিশাল, বগুড়া, রংপুর, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

তিনি আরো বলেন, রাজধানীর বাইরে সারাদেশকে ১৮টি জোনে ভা’গ করে আমাদের দাফ*ন কার্যক্রম চলছে। ধর্মীয় বিধান মেনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী দা*ফন বা সৎ*কারের কাজ করে যাচ্ছি অামরা। শুধু মুসলিমই নন; সনাতন ধর্মালম্বীদের জন্যেও রয়েছে আমাদের বিশেষ দল। এছাড়া মহিলাদের দাফ*নে সহযোগিতা করছেন ১২ জনের একটি মহিলা দল।

গত ৭ এপ্রিল থেকে দেড় মাসে ধর্মবর্ণনির্বিশে*ষে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পুলিশ বাহি*নী, আনসার সদস্য, সচিব, সাংবাদিক, ব্যাংকার, বীর মুক্তিযো*দ্ধাসহ নানা পেশার মানুষকে দা*ফন ও সৎ*কার করেছে কোয়ান্টাম।

ছালেহ আহমেদ বলেন, এর মধ্যে আমরা তিনজন বীর মুক্তিযো*দ্ধাকে তাদের শেষযাত্রায় সম্মানের সাথে বি’দায় দিতে পেরেছি। যারা অামাদের দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন; সেইসব বীর মুক্তিযো*দ্ধাকে মমতার সাথে নিজেদের হাতে কব*রস্থ করতে পেরে আমরা ধন্য মনে করছি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচ সরকারের ম*রদে*হ সৎ*কার করি আমরা।

তিনি জানান, গত ৯ মে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মা*রা যান তিনি। ঢাকা থেকে গৌতম আইচের ম*রদে*হ যথাযথভাবে ডব্লিউএইচও-র নির্ধারিত ব্যাগে প্যা*কিং করে বরিশালে নেয়া হলে কোয়ান্টাম বরিশাল দল তাকে সমা*ধিস্থ করে। গত ১১ মে ঢাকা মেডিকেলের করোনা ইউনিটে মা*রা যান নর্দার্ন মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. আনিসুর রহমান। তার ম*রদে*হ দা*ফন করে কোয়ান্টামের দাফ*ন দল।

এভাবেই দিনরাত স্বেচ্ছাসেবার জন্যে প্রস্তুত থাকছেন কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবক দল; যারা ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত। দিনে বা রাতে যেকোনো সময়ে ডাক পড়লেই তারা হাজির হয়ে যান হাসপাতাল বা মৃ*তের বাসাবাড়িতে।

জানা যায়, একটি দা*ফন প্রক্রিয়ায় প্রায় ৩০ রকমের উপকরণ ব্যবহার করে কোয়ান্টাম। দা*ফন কাজে সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয় অ্যা*লকো*হলসহ কয়েক ধরনের জীবাণুনা*শক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী এ দা*ফন কার্যক্রম চলছে।

কার্যক্রমের পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক, সেফটি গ্লাস, ফেস শি*ল্ড, সা*র্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, হে*ভি গ্লাভস, নে*ক কভার, ম*রদে*হের কা*ফনের কাপড়, ম*রদে*হ বহনের জন্যে বিশেষ ব*ডি ব্যাগসহ সুরক্ষার জন্যে কয়েক ধরনের জীবাণুনা*শক- পুরোটাই কোয়ান্টামের স্ব-অর্থায়নে স্বেচ্ছাসেবায় পরিচালিত হচ্ছে।

কোয়ান্টাম দাফ*ন কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ছালেহ আহমেদ জানান, করোনায় মা*রা গেলেও মৃ*তদের জা*নাজা পড়ানো হয় সাধারণ ম*রদে*হের মতো যথাযথ সম্মানের সাথে ক*বরস্থ করার পর মৃ*তের জন্যে আন্তরিক দোয়া করা হয়।

কো*ভিড-১৯ স্বেচ্ছা দাফন কার্যক্রমের সমন্বয়ক বলেন, একজন মানুষ মা*রা গেলে পরিবারের মানুষ কাছে থাকবেন না, আ*ত্মীয়রা জা*নাজায় আসবেন না- এটা আমাদের দেশের সংস্কৃতি নয়। করোনার এই সময়ে স্বজনহী*ন সেইসব মৃ*তকে শেষ সম্মান জানানোর মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই এ সেবাকাজে নেমেছি। দেশের এরূপ পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত অামরা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যেতে চাই।