নড়াইলে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ এবং হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে ১৫ হাজার পরিবারের দাবি!

5080
86
নড়াইলে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ এবং হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে ১৫ হাজার পরিবারের দাবি!
নড়াইলে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ এবং হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে ১৫ হাজার পরিবারের দাবি!

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের নবগঙ্গা নদী পূনঃখ’ননে ক্ষ’তিগ্র’স্থ দুই তীরের ১৫ হাজার পরিবার সরকারের কাছে ক্ষ’তিপূরণ দাবি এবং হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। নবগঙ্গা ভূমিহীন অধিকার আন্দোলন নামে একটি সংগঠন এ দাবি জানিয়ে নড়াইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন এবং নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে মানববন্ধন করেছে।

রোববার (১৪ জুন) বেলা ১১টায় নড়াইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নবগঙ্গা ভূমিহী’ন অধিকার আন্দোলনের কার্যকরী সভাপতি তুহিন চৌধুরী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, লোহাগড়া উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীর দুই তীরে দেশ স্বাধীনের পর থেকে বিভিন্ন সরকারের আমলে ২ হাজার ভূমিহী’ন পরিবারকে নদীর চরের খাস জমি কারও ৯৯ ও ৭৭ বছরের লিজ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক জমির মালিক প্রাপ্ত জমি হস্তান্তরের শর্তানুসারে অন্যের কাছে বিক্রিও করেছে। এ কারণে নদীর দুই পাড়ে বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার বসবাস করছে। বর্তমান সেটেলমেন্ট জরিপও আমাদের পক্ষে।

তিনি জানান, সম্প্রতি ২৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নড়াইলে ‘মধুমতি-নবগঙ্গা উপ-প্রকল্প’-এর কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যে নবগঙ্গা নদীর দু’পাড়ে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীর সিমানা নির্ধারণ করে জমির মালিকদের কোনো নোটিশ এবং শর্তানুযায়ী ক্ষ’তিপূরণ না দিয়েই গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে এ নদীর প্রায় ১৭ কিঃমিঃ পূনঃখ’নন কাজ শুরু করেছে।

তিনি বক্তব্যে বলেন, ইতিমধ্যে মল্লিকপুর, কলাগাছি, কোলা ও মাইগ্রামে নদীর দুই পাড়ের দীর্ঘ বছরের ১হাজার বসতবাড়ি, বিভিন্ন স্থাপনা, হাজার হাজার গাছপালা কে*টে ফেলা হয়েছে। এসব স্থাপনা এবং গাছের ক্ষ’তিপূরণ চেয়ে বিভিন্ন সময় সমাবেশ, মানববন্ধন, জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোডের্র দার’স্থ হলেও কোনো লাভ হয়নি। পরবর্তীতে গত ২২মে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করি। এর প্রেক্ষিতে গত ৮জুন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের মাননীয় বিচারক মোঃ এনায়েতুর রহিম আগামি ৩০ দিন পর্যন্ত এ কাজের ওপর স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন।

উল্লেখ করা হয়, হাইকোর্টের রায়ের কপি নড়াইল জেলা প্রশাসক এবং নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লির্ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছে দেওয়া হয়েছে। এ সত্ত্বেও নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী খন’নের কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এ কাজের প্রতিবা”দ করায় একটি মহল মোবাইল ফোন থেকে আমাদের বিভিন্ন প্রকার হ’*য়রানি, মামলা-হা*’মলা ও হ’*ত্যার ভ*য় দেখাচ্ছে। এ কারণে সংগঠনের পক্ষ থেকে ১২জুন লোহাগড়া থানায় একটি জিডি করেছি। এখন আমাদের পূনর্বাসন না করে বা ক্ষ’তিপূরন না দিয়ে নদী খ’নন করলে পথে ব*সতে হবে। সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি শেখ লায়েক আলী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ টুলু শেখ, সংগঠনের নেতা বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াত প্রমুখ।

নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ নেওয়াজ তালুকদার বলেন, এ সংক্রান্ত একটি রায়ের ফটোকপি পেয়েছি। রায়ের কপিতে পূর্ণাঙ্গ কিছু লেখা নাই। কোন্ কোন্ দা’গে ৩০ দিনের স্থিতি অবস্থার আদেশ দেওয়া হয়েছে তা উল্লেখ নাই নয়। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের অফিসিয়াল কোনো মেইলও পাইনি। পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া দু’এক দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের সাথে এ বিষয়টি নিয়ে কথা হবে বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, এক সময়কার প্রমত্তা নবগঙ্গা নদী দীর্ঘ বছর ধওে দখ’লদারদের কবলে পড়ে এর দু’তীর দখ*ল হয়ে এখানে বিভিন্ন স্থাপনা ও গাছপালা গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এ নদীর নব্যতাকে ফিরিয়ে আনতে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী লোহাগড়া-বড়দিয়া অংশে ১৭কিঃমিঃ পূনঃখ’ননের জন্য ১শ ১০লাখ টাকার ৯টি গ্রুপের কাজ শুরু হয়েছে। এটি পূনঃখ’নন হলে নদীটি দখ’লদারদের হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং দীর্ঘ ৫০ বছর পর এখানে জোয়ার ভাটা ফিরে আসবে। ফলে নদীতে মিষ্টি পনি প্রবেশ, বিভিন্ন খালের সাথে পূনঃসংযোগ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, জীব বৈচিত্র ও মৎস সম্পদ বৃদ্ধি পাবে।