স্টাফ রিপোর্টার
কো*ভিড-১৯ (করো’না) মহা*মা’রীর সময় নড়াইলবাসী যখন চিকি*ৎসা সেবা, ত্রাণের অপ্র*তুলতা, এই রো*গে মৃ*ত্যুব*রণকারী ব্যক্তিদের দা*ফন বা দা*হ নিয়ে সম*স্যায় পড়েছেন। ঠিক তখন মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
করো*না কালে যে সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাধারণ মানুষের পাশে আছেন তাদের মধ্যে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন, বঙ্গবন্ধু স্কো*য়াড, হ*টলাইন ত্রাণ বিতরণ টীম অন্যতম। এ ছাড়াও রয়েছে এম টু রেস*কিউটীম, কামব্যাক সোসাইটি, মানবিক নড়াইল, স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন, টীম তারুন্য হান্ড্রেড, উষার আলো সমাজ কল্যাণ সংঘ, র*ক্তের ফেরীওয়ালা, নড়াইল, লোহাগড়া ব্লা*ডব্যাংক, নড়াইল ব্লা*ডব্যাংক সহ আরো বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম অনিক বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা এই সংগঠনের সভাপতি। তিনি বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে করো’নায় আক্রা*ন্ত প্রায় ২০০ রো*গীর বাড়িতে অক্সিজেন সি*লিন্ডার এবং পা*লস অ*ক্সিমিটার দেয়া হয়েছে। ভ্রাম্যমান মেডিক্যাল টীম গঠন করে, টেলিমে*ডিসিনের মাধ্যমে এবং ৮৮৭ জন রো*গীকে বাড়ি বাড়ি পর্যায়ে চিকি*ৎসা সেবা প্রদান করেছি। করো’নার নমুনা সংগ্রহের জন্য ৯জন টেকনোলজিষ্ট নিয়োগ দিয়ে তাদের সম্মানীর ব্যবস্থা করেছি। এ পর্যন্ত ৬৫০০ জনমানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী, চিকি*ৎসক এবং গনমাধ্যমকর্মীদের মাঝে সুর*ক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের ভ্রাম্যমান মেডি*ক্যাল টীমের চিকি*ৎসক ডাঃ দীপ বিশ্বাস সুদীপসহ সংগঠনের অনেকেই করো’নায় আ*ক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনায় আমি আমার মাকে হা*রিয়েছি। আমাদের সভাপতি, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও তার পরিবারের সদস্যরা করো’নায় আ*ক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, সংসদ সদস্য মাশরাফীর আহবানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, সংগঠন, ব্যবসায়ী, প্রবাসীসহ সাধারণ মানুষ আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। সাংসদ মাশরাফীর ব্রেসলেট বিক্রির টাকা দিয়ে অন্যান্য কর্মকান্ডের পাশাপাশি নড়াইলে ১০ শ*য্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনের কাজ শুরু করেছি।
করোনায় আ*ক্রান্ত হয়ে মৃ*ত্যবরণকারীদের দা*ফনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড মাধ্যমে মানুষের পাশে আছে বঙ্গবন্ধু স্কো*য়াড।
সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, ২০২০ সালের ৯ এপ্রিল নড়াইল-২ আসনেরসংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার পরামর্শে এই সংগঠনটির যাত্রা শুরু। তিনি বলেন, করো’নায় মৃ*ত ব্যক্তিদের দা*ফন করতে ভ*য় পান স্বজনেরা। স্বা*স্থ্যবিধি মেনে আমরা নড়াইল ও পাশ্ববর্তী মাগুরা জেলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনের দা*ফন ও ২ জনকে দা*হ করেছি।
নড়াইল সদর হাসপাতালে স্থাপিত ডক্ট*রস সে*ফটি চেম্বারে আসা করো’নায় আ*ক্রান্ত বা উপসর্গের রো*গীদের চিকি*ৎসার বিষয়ে সহযোগিতা করছি। হ্যান্ড মাইক দিয়ে হাসপাতালে আসা রো*গী এবং তার স্বজনদের মা*ক্স পরাসহ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আহবান করি। নড়াইল সদর ও লোহাগড়ায় মা*ক্স বিতরণ, ল*কডাউন বাস্তবায়নের প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছি। প্রায় চারশত স্বেচছাসেবক কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনিজানান, সংগঠনের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন, লোহাগড়া উপজেলা আহবায়ক আনিসুর রহমান, হাসপাতাল টীমের প্রধান ও দা*হ টীমের সংসদ প্রতাপ দাস ক’রোনা প*জেটিভ হয়েছেন। এ ছাড়া অনেক সদস্য উপসর্গ নিয়ে হোম কোয়ারান্টাইন এ আছেন।
তিনি জানান, এক একটি দা*ফনকার্য সম্পন্ন করতে সুর*ক্ষা সামগ্রী, যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। বিভিন্ন ব্যক্তি, বেসরকারি সংগঠন এবং নিজের থেকেই ব্যয় বহন করে আসছি।প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা এখনো কোন সহযোগিতা পাইনি। “একটি ফোনেই পৌছে যাবে ত্রাণ” এই শ্লোগানকে সামনে ক’রোনাকালীন সময়ে সামনে রেখে নড়াইলের কালিয়াসহ নড়াইল সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কাজ করেছেন হ*টলাইন ত্রাণ বিতরণ টীম।
টীমের পক্ষে নড়াইলের কালিয়া পৌরসভার মেয়র ফকির মুশফিকুর রহমান লিটন জানান, করোনাকালীন সময়ে নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তির নির্দেশে একটি হ*টলাইন নাম্বার চালু করা হয়। এ নাম্বারে কেউ ফোন দিয়ে ত্রাণের কথা বললে আমাদের টীমের স্বেচ্ছাসেবকরা বাড়ি গিয়ে তা পৌছে দিয়েছি। গত ৬ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ৭ হাজার জনকে এ সহযোগিতা করেছি।
তিনি বলেন, করো’নাকালীন সময়ে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে*ক্সে ড*ক্টরস সে*ফটি কর্নার স্থাপন, কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জীবা*নুনাশক স্প্রে করা, মানুষের মাঝে মা*স্ক, হ্যা*ন্ডস্যা’নিটাইজার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও করো’নায় আ*ক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি চিকি*ৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় বাজার পৌছে দেয়ার কাজ করেছি আমরা। সম্পূর্ন স্বেচ্ছাসেবী কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে আমাদের টীম এ সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: রবিউল ইসলাম বলেন, কো’ভিড-১৯ মহামা’রীর সময় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যেভাবে জনসাধারণের পাশে দাড়িয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।আমরা তাদের সমাজ সেবামূলক কর্মকান্ডে পাশেআছি। আগামীতেও এ সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি তাদের কর্মকান্ড অব্যাহত রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কো’ভিড-১৯ (করো’না) এই সময়ে আমরা স্থানীয় প্রশাসন সাধারণ মানুষের পাশে আছি। এই সময়ে নড়াইলের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জনসাধারণের পাশে দাড়িয়ে অনেক ভাল কাজ করছে। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাদের কর্মকান্ড পরিচালনায় কোন সহযোগিতার প্রয়োজন হলে আমরা তা করার চেষ্টা করবো।