নড়াইল-লোহাগড়ায় ৬ লেন রাস্তার সুফল পেতে প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা দরকার

2
147
নড়াইল-লোহাগড়ায় ৬ লেন রাস্তার সুফল পেতে প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা দরকার
নড়াইল-লোহাগড়ায় ৬ লেন রাস্তার সুফল পেতে প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা দরকার

আবদুস ছালাম খান

পদ্মা সেতুসহ ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়কের ৬ লেন রাস্তার সুফল পেতে লোহাগড়ার রাস্তা ও রাস্তা সংলগ্ন পাকা স্থাপনা নির্মাণে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকা দরকার। মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত ফি’ডার রাস্তাগুলিকে অবশ্যই প্রশস্ত করে নির্মাণ করতে হবে। অথবা এই মুহুর্তে নির্মাণ করা না গেলে ভবিষ্যতে নির্মাণ উপযোগি সুযোগ রাখতে হবে। অন্যথায় দীর্ঘদিনের উন্নয়ণ ব’ঞ্চিত নড়াইল লোহাগড়ার মানুষ ভবিষ্যতেও এই মহাউন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে।

নড়াইল-লোহাগড়ার সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সমাজ সচেতন মানুষদের এখনই এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন বিবেচনায় এক সময়ের অ’বহে’লিত নড়াইল-লোহাগড়া এখন সড়ক ও রেল যোগাযোগের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের মধ্যে। এশিয়ান হাইওয়ের স্বপ্নের পদ্মাসেতু ও দৃষ্টি-নন্দন কালনা সেতু হয়ে ৬ লেনের ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়ক এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলপথের ঢাকা-যশোর ভায়া পদ্মাসেতু রেললা’ইন এখন বাস্তবায়নের পথে। দুটি মহাউন্নয়ন প্রকল্প অর্থ্যাৎ মহাসড়ক ও রেললাইন উভয়ই নড়াইল-লোহাগড়ার উপর দিয়ে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের এই রেললা’ইনের লোহাগড়া ও নড়াইলে একটি করে রেলস্টেশন রাখা হয়েছে। পদ্মাসেতু ও কালনাসেতু সহ মহাসড়ক চালু হলে সঙ্গত কারণেই নড়াইল-লোহাগড়ায় যানবাহনের চা’প অত্যা’ধিক বে’ড়ে যাবে। মূল মহাসড়ক দিয়ে আসা যানবাহনগুলি পার্শ্ববর্তী গন্তব্যে যেতে মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত রাস্তা ব্যবহার করবে। ফলে সংযোগ সড়কগুলিকে ওই সব যানবাহন চলাচল উপযোগি করে নির্মাণ করা দরকার। অথবা এই সময়ে নির্মাণ করা না গেলে ভবিষ্যতে নির্মাণ উপযোগি জায়গা রেখে রাস্তার পাশে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিতে হবে।

অর্থাৎ এই মহাসড়ক সংশ্লিষ্ট এলাকায় রাস্তা ও রাস্তাপার্শ্ববর্তী যে কোন স্থাপনা নির্মাণেএকটি মহাপরিকল্পনা থাকা দরকার। অন্যথায় পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলা এমনকি এই জেলার মফস্বলঃ এলাকার মানুষ এই মহা কর্মযজ্ঞের সুফল থেকে ব’ঞ্চিত হবে। কালনাসেতু নির্মাণে পর লোহাগড়ার উপর দিয়ে যানবাহনের যে চা’প হবে তা সামলাতে হি’মশি’ম খে’তে হবে।

কারণ কালনা সেতু পার হবার পর লোহাগড়া থেকে ইতনা, রাধানগর, বড়দিয়া, নড়াগাতি, কালিয়া, নলদী, লাহুড়িয়া এবং মাগুরা জেলার মহম্মদপুর, শালিখা, নহাটা-পলিতা যাওয়া যানবাহনগুলি সহজে তাদের গন্তব্যে যাওয়ার উপযোগি অর্থ্যাৎ প্রশস্ত সংযোগ সড়ক নেই বললেই চলে। এমনকি মহাসড়কের সবচেয়ে নিকটবর্তী মোকাম লোহাগড়া বাজারের মা’লামা’ল আনা-নেয়া যানবাহনগুলিও সহজে বাজারে প্রবেশ করতে পারে না। বাজারে প্রবেশের সংযোগ সড়ক বলতে যা আছে তা এতই সং’কীর্ন যে ওই রাস্তা দিয়ে বাস-ট্রাক দূরের কথা জীপ-কার যাওয়াও ক’ষ্টক’র। দুইখানা দ্রুতগামী ভ্যান-রিকশাও সহজে যেতে পারে না। রাস্তার পাশে পা’য়ে হা’টা লোকজনের জন্য কোন ফুটপাত নেই।

একইভাবে নহাটা-পলিতাগামী সদ্য নির্মিত রাস্তার বাজারের মধ্যদিয়ে যাওয়া অংশটি এতই সং’কী’র্ণ যে এই রাস্তা দিয়ে একখানা ট্রাক ঢু’কলে পুরো রাস্তায় যা’নজ’ট লেগে যায়। অথচ নবনির্মিত রেলস্টেশন থেকে মহাসড়কে যেতে এই রাস্তাটিই ব্যবহার করতে হবে। রেলস্টেশন থেকে নবগঙ্গা নদীর লেঃ মতিউর রহমান সেতু হয়ে উপজেলা সদরে যাবার রাস্তাটিরও একই অবস্থা। জয়পুর জামরুল তলার মোড় থেকে ঈদগাহ হয়ে ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তাটি খুবই সং’কী’র্ণ। রেললাইন চালু হলে এই দুটি রাস্তায় সঙ্গত কারণেই যানবাহনের চা’প বে’ড়ে যাবে। তাই অ’তিরিক্ত যান বাহনের চা’প সাম’লানোর পরিকল্পনা এখনই মা’থায় রাখা দরকার।

রাস্তাটির বাজারের বাইরের অংশ ১৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তা করা হলেও বাজারের মধ্যে ১২ ফুট রাস্তা করা হয়েছে। অনুরুপভাবে মহাসড়কের কুন্দশী চৌরাস্তা থেকে ইতনা হয়ে রাধানগর হাট পর্যন্ত যাওয়া রাস্তাটি নতুন করে পা’কা করা হচ্ছে। রাস্তাটি প্রথমে ১৬ ফুট প্রশস্ত করে নির্মান পরিকল্পনা করা হলেও রাস্তার পাশে জায়গা না থাকার অ’জুহা’ত তু’লে ১২ ফুট রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।

তাহলে এখনই যদি রাস্তার পার্শ্বে জায়গা না থাকার প্রশ্ন আসে তবে ভবিষ্যতে কিভাবে প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হবে। বর্তমানের সংকীর্ণ রাস্তাগুলির পাশ দিয়ে বড় বড় পাকা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব ভবন নির্মাণ কালে রাস্তা সংলগ্ন জায়গায় ভবন নির্মাণের অনুমতি দেবার সময় আগামী ৫০/১০০ বৎসর পর কত প্রশস্ত রাস্তা দরকার হবে তা মা’থায় রাখতে হবে। তা না হলে রাস্তা প্রশস্তকরণের সময় রাস্তার পার্শ্বের এখনকার অনুমোদিত স্থাপনাগুলিকে অ’বৈ’ধ স্থাপনা আখ্যা দিয়ে উ’চ্ছেদ অভিযা’ন চা’লাতে হবে অথবা কয়েকগুন বেশি ক্ষ’তিপূ’রণ দিতে হবে। যা উভয় পক্ষের জন্য বি’ব্রতক’র। তখন কি কোটি টাকার ভবনগুলিকে বু’লডো’জার দিয়ে গু’ড়িয়ে দিয়ে সাংবাদিকরা ছবি তুলবে?

লেখক সিনিয়র আইনজীবী ও সাংবাদিক এবং সভাপতি লোহাগড়া প্রেসক্লাব।