প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাফল্য ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র

222
12

মো. জয়নাল আবেদীন

বর্তমান সরকারের সময়ে (২০০৯-২০২০) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর/সংস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রথম স্থান পুনরুদ্ধারসহ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সেনবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ এর মোট ৬,৭৩১ জন শান্তিরক্ষী সাফল্যেও সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। নৌবাহিনীতে ৩১টি জাহাজ, দু’টি মেরিটাইম হেলিকপ্টার, দু’টি মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট এবং দু’টি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আজ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে বিশ্ব দরবারে আত্মপ্রকাশ করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকল্পে বর্তমানে নৌবাহিনীর বিভিন্ন জাহাজ ও ঘাঁটিতে ৪৯২ জন নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে আধুনিক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিমান, হেলিকপ্টার, র‌্যাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া, কক্সবাজারে ‘বিমান বাহিনী ঘাঁটি শেখ হাসিনা’, যশোরে ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’, বগুড়ায় ‘বিএফ শাহীন স্কুল এন্ড কলেজ’ এবং চট্টগ্রামে ‘এয়ারমেন ট্রেনিং ইন্সস্টিটিউট’ নির্মাণ করা হয়েছে।

বিশ্বপরিসরে শান্তিরক্ষার পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান জঙ্গিবাদ, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস মোকাবিলায় এবং সামরিক কূটনীতির ক্ষেত্রে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে দীর্ঘ ২৩ বছর পর প্যারিস (ফ্রান্স), সিউল (দক্ষিণ কোরিয়া) ও ব্রাসিলিয়ার (ব্রাজিল) বাংলাদেশ দূতাবাসে নতুন তিনটি প্রতিরক্ষা শাখা সৃজনসহ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর এর বিদ্যমান ১৯টি শাখার অতিরিক্ত নতুন ০৮টি শাখা এবং বিদ্যমান ০৮টির অতিরিক্ত ০২টি নতুন ব্যুরো সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া, ০৫টি সেনানিবাসে নতুনভাবে ০৫টি আর্মি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে।

সামরিক বাহিনী কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজে ‘শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স’ একাডেমিক ভবন, ১৪ তলাবিশিষ্ট পারিবারিক বাসস্থান (কৃষ্ণচূড়া) বিল্ডিং এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন দু’টি প্লানারি নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানায় বর্ধিতহারে কার্তুজ উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য ৪৫,০০০ বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট একটি শপ এবং গোলাবারুদ উৎপাদন ও সংযোজনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সিএ-২ ও হাই ক্যালিবার অ্যামুনিশন ফ্যাক্টরি বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে।

দেশের ৩২ (বত্রিশ)টি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারকে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। দেশের পাঁচটি স্থানে ১২টি ১ম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো) এর উপগ্রহ চিত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার টাইডাল মাডফ্ল্যাট এর মানচিত্র প্রণয়ন করা হয়েছে যা বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, ম্যানগ্রোভ বনায়ন ও সমুদ্র হতে ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনায় ব্যবহার করা যাবে। স্পারসো দূর অনুধাবন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে বোরো ও আমন ফসল আবাদের এলাকা পর্যবেক্ষণ করে এ সংক্রান্ত প্রাক্কলিত তথ্যাদি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরসমূহকে প্রদান করে আসছে যা জাতীয় পর্যায়ে খাদ্য নিরাপত্তা পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তরের ‘ডিজিটাল ম্যাপিং সিস্টেমের উন্নতি’ প্রকল্পের আওতায় সমগ্র দেশের ১:২৫,০০০ স্কেলের ৯৮০টি ডিজিটাল মানচিত্র এবং ৫টি বিভাগীয় শহরের (বরিশাল, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেটে) ১:৫,০০০ স্কেলের ২৫০টি ডিজিটাল মানচিত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া, BMD Weather APPS এবং BMD চালুসহ দেশের চব্বিশটি পর্যবেক্ষণাগারে স্বয়ংক্রিয় মাটির আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে।