আবদুস সাত্তার
বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান সিকদার। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান তাঁর। বাড়ী নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এই বীরযোদ্ধার বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। দেশকে শত্রুমুক্ত করে লাল-সবুজের পতাকা এনেছেন।
এছাড়া আজীবন আওয়ামী লীগের জন্য নিজেকে নিবেদিত করে গেছেন। নড়াইল সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কৃতি সন্তান মতিয়ার রহমান সিকদার ১৯৫৫ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের আউড়িয়া ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে মতিয়ার রহমান সিকদারের বীরত্বগাঁথায় গর্বিত এলাকাবাসী ও তার পরিবার। বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান সিকদারের পরিবারের সদস্য রবিউল ইসলাম সিকদার বলেন, আমার দাদা মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর জন্য আমরা গর্বিত। তিনি আজীবন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ছিলেন। এলাকায় তাঁর অনেক সুনাম রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে দাদার বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আমরা গর্বিত। ১৯৭১ সালে তিনি নেতৃত্ব প্রদান করেন। যা নড়াইল জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অম্লান হয়ে রয়েছে। এছাড়া আমার দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান আউড়িয়া ইউনিয়নের দীর্ঘ ২২ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন।
আমার দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধের বরেণ্য সংগঠক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঘনিষ্ঠজন ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণের পরে দেশকে রক্ষা করার জন্য এলাকার লোকজনদের কে নিয়ে জাপিয়ে পরেন আমার বড় ফুফা বি.এম. মতিয়ার রহমান নড়াইলে বাস ভবনে খন্দকার আব্দুল হাফিজ সাহেব লেঃ মতিয়র রহমান এখলাস উদ্দিন সহ আমার দাদা মরহুম সিকদার মতিয়ার রহমান পাক হানাদার এর বিরুদ্ধে এবং দেশকে রক্ষা করার জন্য নির্দেশ দেন। বি.এম মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে নড়াইলের ট্রে- জারি ভেঙ্গে অ/স্ত্রগু/লি লো/টপাট করে পাক হা/নাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁ/পিয়ে পড়েন। নড়াইলে পার্কসেনা ও বিমান বাহিনীর আক্রমনের ফলে সব ত/ছনছ হয়ে যায়। পাক হা/নাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা নড়াইলে প্রবেশ করে। জীবন রক্ষার জন্য আমার দাদা সিকদার মতিয়ার রহমান এবং আমার বড় ফুফা ভারতে পালিয়ে যান। তখন আমার পিতা পঞ্চম শ্রেনির ছাত্র । আলবদর রাজাকারা আমাদের বাড়িতে ঢুকে আমার ছোট দাদা মোঃ মানিক সিকদারকে ধরে নিয়ে যায়। যা ”যশোর জেলার ইতিহাস” বই এর আসাদুজ্জামান আসাদ সম্পাদিত (৫১৭ – ৫১৮ পৃষ্ঠায়) বিস্তারিত উল্লেখ যোগ্য এবং আমাদের বাড়ি লুটপাট করে। আমার দাদা মতিয়ার রহমানকে খোজা খুজি করে।
পরবর্তীতে আমার দাদা সিকদার মতিয়ার রহমান ১১০ জন মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে এলাকায় আসেন। নড়াইল লোহাগড়া আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আমাদের বাড়িতে ক্যাম্প স্থাপন করেন। বিভিন্ন সময়ে পাক হানাদার বাহিনী এবং দোসরদের সঙ্গে যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। পরবর্তীতে পাক হানাদার বাহিনী এবং দোসরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে ১০ই ডিসেম্বর নড়াইল পাক হানাদার মুক্ত হয়।