নড়াইলে স্কুলে ১১৭জন শিক্ষক ও জেন্ডার প্রমোটর করোনাকালীন ১০ মাস ভাতা পাননি

545
6
নড়াইলে অগ্নিকান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষাক্রমিক পাঠদানে নিয়োগপ্রাপ্ত ১শ ১৭জন শিক্ষক ও জেন্ডার প্রমোটর করোনাকালীন ১০ মাস ভাতা পাননি। গত ৫ মাস পূর্বে শিক্ষক-প্রমোটররা চাঁদা তুলে বকেয়া ভাতা পাবার আশায় ঢাকায় গেলেও আশ্বাস মেলেনি। সদ্য চাকরি পাওয়া এসব বেকাররা বলেছেন, করোনাকালীন সংকটে সরকারি-বেসরকারী চাকরীজীবীরা বেতন-ভাতা পেলে তারা কেন বঞ্চিত হবেন!

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের মতো নড়াইলের ৪২টি কেন্দ্রে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১০-১৮ বছর বয়সী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম সংগীত, আবৃত্তি শিক্ষা, খেলাধুলা এবং কিশোর-কিশোরীদের জেন্ডার বৈষম্য, মাদকাসক্তি, বাল্য বিবাহ, বয়োসন্ধীকালের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সমস্যাসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালু হয়।

উপজেলা প্রশাসন এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সমন্বয়ে নিয়োগ প্যানেল জেলার ৩৯টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভায় মোট ৪২ কেন্দ্রে সংগীত ও আবৃত্তি বিভাগের ৮৪জন শিক্ষক এবং তিন উপজেলায় ৯জন জেন্ডার প্রমোটর নিয়োগ দেওয়া হয়। একটি কেন্দ্রে ৩০জন (২০জন কিশোরী ও ১০জন কিশোর) ছাত্র-ছাত্রীকে ক্লাস ম্যানেজমেন্ট কমিটি বাছাই করে শিক্ষকরা সপ্তাহে এক দিন আবৃত্তি ও এক দিন গানের ক্লাস এবং জেন্ডার প্রমোটররা সপ্তাহে দুই দিন ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতনতামূলক ক্লাস শুরু করেন। প্রতি ক্লাসে শিক্ষকরা হাজিরা ভিত্তিতে ৫শ টাকা এবং জেন্ডার প্রমোটররা ১ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। কিন্তু ২০২০ সালের সালের মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এ বছরের ফেব্রুয়ারী থেকে পূনরায় চালু হলেও এসব শিক্ষক-প্রমোটররা গত বছরের এপ্রিল থেকে জানুয়ারী মাস ১০মাস ভাতা পাননি।

জেন্ডার প্রমোটর মিতু খানম, হ্যাপি খানম ও যুঁথী মিত্র জানান, আমরা করোনাকালীন সংকটে ১০ মাসের বকেয়া ভাতা পাবার আশায় ৫ মাস পূর্বে প্রমোটর ও শিক্ষকদের কাছ থেকে ৫শ ও ২শ টাকা করে নিয়ে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করলেও কোনো আশ্বাস পাইনি। পরে সবার অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি সরকার যেন মানবিক কারনে এই বকেয়া ভাতা পরিশোধ করেন।
এ ব্যাপারে কিশোর-কিশোরী ক্লাবের মাঠ সুপারভাইজার মোঃ জাহাঙ্গাীর আলম জানান, করোনার কারনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাবের সদস্যদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তবে করোনা শুরুর পূর্বে প্রত্যেক কেন্দ্রে পরিপূর্ণ সদস্য পাওয়া গেলেও বর্তমানে হাজিরা একটু কম হচ্ছে।

এ ব্যাপারে নড়াইল মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং ক্লাস ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মোঃ আনিছুর রহমান এ প্রতিনিধিকে বলেন, মানবিক কারনে শিক্ষক ও জেন্ডার প্রমোটরদের করোনাকালীন ভাতার ব্যাপারে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন চাকরির শর্তানুযায়ী শিক্ষক-প্রমোটররা ক্লাসে হাজিরার ভিত্তিতে ভাতা পাবেন। সেজন্য এই বকেয়া ভাতা পাবার সুযোগ নেই। এটা পেতে গেলে আন্ত মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সংশোধনী আনতে হবে।