স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলে পুলিশ কর্তৃক সাংবাদিক হয়রাণির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নড়াইল সাংবাদিক সমাজের আয়োজনে নড়াইল প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবির টুকু, সাধারণ সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলু, সাংবাদিক কার্ত্তিক দাস, কাজী হাফিজুর রহমান, মলয় নন্দী, সাইফুল ইসলাম তুহিন, শেখ বদরুল আলম টিটো, ওমর ফারুক প্রমুখ। পরে সাংবাদিক নেতারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করেন।
এসময় বক্তরা বলেন, পুলিশ সুপারের আচরণ এবং সাংবাদিকের বাড়িতে গভীররাতে পুলিশের অভিযান অত্যন্ত দু:খজনক। এ ধরণের ঘটনা গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে চরম অন্তরায়। তারা এ ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ এবং বিষয়টির সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
জানা গেছে, বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পুরাতন বাস টার্মিনালে ইজিবাইক সমিতির সভাপতি মাছুম জমাদ্দারের সভাপতিত্বে সমিতির নেতা নবির হোসেন, ইসমাইল সিকদার, আলিনুর বিশ্বাস, মনির হোসেন মুন্না, গুরুচাঁদ কুন্ডু, হাবিব মোল্যা, আলমসহ অনেকে এক প্রতিবাদ সমাবেশে জানান, নড়াইল পৌর কর্তৃপক্ষ পৌর এলাকায় প্রায় ১ হাজার ইজিবাইক নিবন্ধন দিয়েছে। এখন পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন গাড়ি না চালিয়ে দু’ভাগে বিভক্ত করে একদিন বাদে একদিন চালানোর নিয়ম করেছে। এতে করে ইজিবাইক চালকদের সংসার চলছে না। নিয়ম ভেঙ্গে কেউ ইজিবাইক চালালে ইজিবাইক প্রতি আড়াই হাজার টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় নানা অযুহাতে ইজিবাইকের চাবি নিয়ে সারাদিন আটকে রাখা হয়। ফলে তাদের সংসার চালানোতো দূরের কথা গাঁটির টাকা দিয়ে জরিমানা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
দেশ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ও নড়াইল নিউজ ২৪.কম এর সম্পাদক শরিফুল ইসলাম বাবলু জানান, “নড়াইলে পুলিশের হয়রানির প্রতিবাদে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা” এ শিরোনামে বুধবার দুপুরে নড়াইল নিউজ ২৪.কম অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে এদিন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সদর থানার ওসি (অপারেশন) তুষার কুমার মন্ডল আমাকে ফোনে জানান, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় স্যার তার অফিসে আপনাকে দেখা করতে বলেছেন। তখন পুলিশ সুপার মহোদয়কে ফোন করলে তিনি বলেন, আপনাকেতো ধরতে লোক পাঠিয়েছি। আপনার ‘এতবড় সাহস হল কি করে, পুলিশের বিরুদ্ধে নিউজ করেন’। এখনই আমার সাথে এসে দেখা করেন।
নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু জানান, বিষয়টি জানার পর আমি পুলিশ সুপারকে ফোনে বৃহস্পতিবার সকালে দেখা করার কথা জানালে এসপি বলেন, না ওকে (বাবলু) এখনই আসতে হবে।
পরে বুধবার রাত ১২টার দিকে সদর থানার ওসি এবং ডিবির ওসি’র নেতৃত্বে পুলিশের দু’টি গাড়ি ইজিবাইক সমিতির সভাপতি ভওয়াখালী এলাকার বাসিন্দা মাছুম জমাদ্দারকে সাথে নিয়ে একই এলাকায় বসবাসরত সাংবাদিক বাবলুর বাড়িতে যায়। এ সময় সাংবাদিক বাড়িতে ছিলেন না। বিষয়টি মাসুম নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, ‘এসপি স্যার বাবলু ভাইকে যেতে বলেছিলেন, তিনি যাননি। তার পর বাবলু ভাইযের ফোন বন্ধ ছিল । তাই খোঁজ নিতে এসেছিলাম।’ সদর থানার ওসি শওকত কবির সাংবাদিকের বাড়িতে পুলিশের গাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেন।
পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, সে লিখেছে যে পুলিশের হয়রানি, এ মিথ্যা কথা সে লিখেছে কেন পেপারে ? অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকের বাড়িতে কোন পুলিশ পাঠাইনি। আমি তাকে আমার অফিসে আসতে বলেছিলাম, সে আসেনি।’