নিজস্ব প্রতিবেদক
নড়াইলের সদরের কার্তিক কুন্ডু মিস্টান্ন ভান্ডার ও পরিতোষ মিস্টান্ন ভান্ডার ও লোহাগড়া বাজারে সুরেন্দ্র সুইটসসহ প্রায় ৫০ বছর ধরে বিক্রি হচ্ছে নলেন গুড়ের সন্দেশ। প্রতিবছর শীতের শুরুতেই কদর বাড়তে থাকে খেজুরগাছের নলেন রসের তৈরি এই মিস্টি। এখন এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও যাচ্ছে । জানা গেছে, নড়াইলের অনেকেই তৈরি করে এই নলেন গুড়ের সন্দেশ। কনে দেখতে যাওয়া, বিয়ে, সুন্নতে খাৎনা, নববর্ষ ছাড়াও এমন কোনো অনুষ্ঠান নেই যেখানে স্থানীয়ভাবে এই সন্দেশ সরবরাহ করা না হয় । কেবল দেশে নয়, বিদেশেও পৌঁছে যাচ্ছে এই সন্দেশা।
শীত মৌসুমে গাছিদের কাছ থেকে দোকানদাররা খেজুর গাছের খাঁটি নলেন রস সংগ্রহ করে থাকেন। সেই রস থেকেই নলেন গুড় তৈরি হয়। আর এই গুড় থেকেই তৈরি হয় সন্দেশ। প্রতিকেজি সন্দেশ এলাকায় বিক্রি হয় সাড়ে ৩শত থেকে ৪০০ টাকায়। এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে ১ থেকে ২ মণ মিষ্টি বিক্রি হয়ে থাকে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ভোজনবিলাসী মানুষ এ সন্দেশ খেতে আসেন। এবং পরিবারের জন্য নিয়ে থাকেন।
এ নিয়ে কথা হয় সুরেন্দ্র সুইটসের বর্তমান মালিক নলেন গুড়ের সন্দেশের কারিগর কানাইলাল কুন্ডুর সঙ্গে তিনি জানান, ১৯৭১ সাল থেকে আমার বাবা সুরেন্দ্র নাথ কুন্ডু নলেন গুড়ের সন্দেশ তৈরি করে বিক্রি করতেন। বাজারে প্রচুর চাহিদা ও সুনাম থাকায় বাবার মৃত্যুর পর ছেলে কানাইলাল কুন্ডু হাল ধরেন দোকানের। নলেন গুড়ের সন্দেশ তৈরি ও বিক্রি তাঁদের পৈতৃক ঐতিহ্য হিসেবেই এখনো রয়েছে। কানাইলাল কন্ডু আরো বলেন, ভোক্তাদের হাতে ভালোমানের মিষ্টি বা খাঁটি নলেন গুড়ের সন্দেশ তুলে দিতে পারলে নিজেরাও খুব তৃপ্ত হই। সৌদি আরব, দুবাই, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে এই সন্দেশ লোক মারফত যাচ্ছে তবে,ভারতেই বেশি চাহিদা এই মিষ্টির।
কার্তিক কুন্ডু মিস্টান্ন ভান্ডরের মালিক প্রফুল্ল কুন্ডু বলেন, এই মিস্টির দোকান আমার বাবা চালাতেন প্রায় ১শত বছর আগে থেকে আমরা মিস্টির ব্যবসার সাথে জড়িত । সুনামের সাখে ব্যবসা করে আসছি প্রতিদিন নলেন গুড়ের সন্দেশ ছাড়াও নানা ধরণের মিস্টি আমরা বিক্রি করে থাকি আমাদের মিস্টি দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ খেতে আসেন এবং অনেকে বিদেশে স্বজনদের জন্যও পাঠান।
নড়াইলের পরিবেশ নিয়ে কাজ করে একজন বলেন, আগেকারদিনে খেজুরের রস প্রচুর পরিমানে পাওয়া গেলেও এখন আগেরমতো পাওয়া যাইনা। এখন খেজুরের গাছ কাটা গাছিরও অভাব এছাড়া বেশীর ভাগ গাছ ইটের ভাটায় জালানি হিসেবে চলে গেছে । এখনি প্রতিকার না করলে অচিরেই দেশ তেকে খেজুরের গাছ হারিয়ে যাবে।