নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে দুর্নীতি; অর্থ আ/ত্মসাতের অভিযোগ

0
44
নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে দুর্নীতি; অর্থ আ/ত্মসাতের অভিযোগ
নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে দুর্নীতি; অর্থ আ/ত্মসাতের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পরিচালিত নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ জাকাত আলি ও তার অপর দুই সহযোগির বিরুদ্ধে তার অধিনস্ত সহকারি প্রশিক্ষক (কৃষি) ইলিয়াস আহমেদের বকেয়া বেতন-ভাতার ৬ লাখের অধিক টাকা আ/ত্মসাতসহ বিভিন্ন কোর্র্সে ভর্তি, সনদ বানিজ্য, ডাইনিং এ অনিয়ম ও লুটপাট, হোস্টেলের সিট বরাদ্ধে দুর্নীতি, সম্পদ আ/ত্মসাত, প্রশাসনিক দুর্বৃত্তায়নের সীমাহীন অনিয়ম ও দু/র্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারি প্রশিক্ষক (কৃষি) ইলিয়াস আহমেদের গত ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বকেয়া বেতন-ভাতা বাবদ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে ১০ লাখ ৬ হাজার ৮০৬ টাকা (গত ১৭.৬.২০২১ তারিখ ৩৪.০১.০০০০.০০৬.২০.০০২.১৩ (অংশ-১)-৫০৫ নম্বর স্মারকে) বরাদ্ধ করা হয়।

এ টাকা প্রদানের জন্য ইলিয়াস আহমেদকে ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ জাকাত আলি তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে সব ধরনের কাগজ পত্রে সহি-স্বাক্ষর গ্রহন করে বকেয়া বেতন-ভাতা বাবদ পাওনা ১০ লাখ ৬ হাজার ৮০৬ টাকার স্থলে মাত্র ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এসময় মোঃ জাকাত আলির অপর দুই সহযোগী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং একই অফিসের প্রধান সহকারি-কাম হিসাব রক্ষক মোঃ আব্দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ইলিয়াস আহমেদ এসময় বাকি ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৮০৬ টাকা দাবি করলে মোঃ জাকাত আলি তাকে তার চাকুরির ক্ষতি করাসহ নানাবিধ ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ জাকাত আলির এহেন হুমকি ধামকির পরও ইলিয়াস আহমেদ একাধিকবার তার প্রাপ্য ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৮০৬ টাকা দাবি করতে থাকেন। কিন্তু প্রাপ্য টাকা না পেয়ে অবশেষে ইলিয়াস আলি গত ০২/০৯/২০২১ তারিখ নড়াইল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমানকে মৌখিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেন।

পরে উপ-পরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমান ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ জাকাত আলিকে ইলিয়াস আহমেদের পাওনা অবশিষ্ট টাকা মৌখিকভাবে প্রদানের জন্য বলেন। কিন্তু, জাকাত আলি বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে অফিসের প্রধান সহকারি-কাম হিসাব রক্ষক মোঃ আব্দুর রহমানের ওপর দোষ চাপিয়ে দেন। পরবর্তিতে ইলিয়াস আহমেদ একই দিন (০২/০৯/২০২১) উপ-পরিচালকের মাধ্যমে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর টাকা আ/ত্মসাতের বিষয়টি লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ প্রাপ্তির পর উপ-পরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমান তাঁর অধিনস্ত সহকারি পরিচালক এ. এম. সাইফুল আনাম এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদকে বিষয়টি মিমাংসার দায়িত্ব দেন। কিন্তু উক্ত ২ কর্মকর্তা সবাইকে নিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন। পরবর্তিতে উপ-পরিচালক অভিযোগটি গত ১২/০৯/২০২১ তারিখে (৩৪.০১.৬৫০০.০০০.১৯.০০০.১৩-৬৮৫ নম্বর স্মারকে) যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরণ করেন। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মহাপরিচালক অভিযোগের বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ভুক্তভুগী ইলিয়াস আহমেদ গত ০৫/১০/২০২১ তারিখ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মনিরুজ্জামানের মাধ্যমে যুব মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নড়াইল যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর মোঃ জাকাত আলির নামে ‘নোটিশ ফর ডিমান্ডিং অব জাস্টিস লেটার’ প্রেরণ করে উক্ত নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে বকেয়া সব টাকা প্রদানের জন্য বলা হয়, অন্যথায় ভুক্তভুগী হাইকোর্টে রিট পিটিশন করবেন বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উক্ত নোটিশ প্রাপ্তির পরও কোন উত্তর বা ব্যাবস্থা না নেওয়ায় ইলিয়াছ আহমেদ হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে রিট পিটিশন দায়ের করেন (নম্বর ১০২৬২ অব ২০২১)।

গত ১৫/১১/২০২১ তারিখে রিট পিটিশনটি হাইকোর্টের বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারপতিদ্বয় রিট পিটিশনে উল্লেখিত বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন বলে এডভোকেট মোঃ মরিুজ্জামান নিশ্চিত করেছেন।

ইলিয়াছ আহমেদের বেতনের ৬ লাখ ৩৬ হাজার ৮০৬ টাকা আ/ত্মসাত, অভিযোগের বিষয়টি নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ২জন কর্মকর্তার মাধ্যমে মিমাংসার চেষ্টাসহ অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ জাকাত আলি, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং প্রধান সহকারি-কাম হিসাব রক্ষক মোঃ আব্দুর রহমানের জানতে চাওয়া হলে তারা তিন জনই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। (নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে অনিয়ম দুর্নীতি পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে)