স্টাফ রিপোর্টার
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পরিচালিত নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ জাকাত আলি ইতোপূর্বে গাইবান্ধায় চাকুরিকালীন সময়ে সেখানকার গালামালের ব্যাবসায়ী সুজিত সরকারের সাথে বন্ধুত্বের সুযোগে বাকীতে চল্লিশ হাজার টাকার মালামাল ক্রয় করেন। পরবর্তীতে মোঃ জাকাত আলি তার সাংসারিক প্রয়োজনে ওই ব্যাবসায়ির নিকট থেকে আরও ৩ (তিন) লাখ টাকা কর্জ (ধার) হিসেবে গ্রহণ করেন। দোকানের বাকীসহ মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করার শর্তে গত ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল তিনশ’ টাকার স্ট্যাম্পে ৪জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে মোঃ জাকাত আলি ‘কর্জ (ধার)টাকার হ্যান্ডনোট’ এ স্বাক্ষর করে গ্রহন করেন। কিন্তু, কর্জকৃত টাকা ৬ মাস অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর বারংবার তাগিদ দেওয়া স্বত্বেও টাকা পরিশোধ না করে মোঃ জাকাত আলি বদলি হয়ে নড়াইলে চলে আসেন। এভাবে ১ বছর অতিবাহিত হলে উক্ত টাকা পরিশোধ না করায় ব্যবসায়ী সুজিত সরকার ২০১৯ সালের ৯ মে উকিল মারফত নড়াইল কর্মস্থলের ঠিকানায় ‘লিগ্যাল নোটিশ’ প্রেরণ করেন।
লিগ্যাল নোটিশে প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে কর্জকৃত ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য বলা হয়। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা দায়েরের কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু, মোঃ জাকাত আলি উক্ত লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির পর টাকা পরিশোধ না করায় পুনরায় গত ০৯/০৬/২০১৯ তারিখ দ্বিতীয় এবং ২০/০৬/২০১৯ তারিখে ১০ দিনের মধ্যে কর্জকৃত ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য চুড়ান্ত নোটিশ প্রেরণ করা হলেও মোঃ জাকাত আলি কোন টাকা পরিশোধ করেননি।
অবশেষে সুজিত সরকার গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর আমলী আদালতে মোঃ জাকাত আলির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বরঃ ৪৪২/২০১৯, ধারা- ৪২০/৪০৬ পেনাল কোড)। মামলাটি দায়েরের পর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগটি গাইবান্ধা জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশ প্রাপ্তির পর পিবিআই এর এস আই মোঃ রফিকুল ইসলাম অভিযোগটি তদন্ত করে অভিযোগ সত্য মর্মে গত ১৫/১২/২০১৯ তারিখে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে মোঃ জাকাত আলি সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাঁকে জামিন দেন। তবে, বিস্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আদালতে হাজির হওয়ার দিন কর্মস্থল ত্যাগের জন্য তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি গ্রহন করেননি। মামলাটি বর্তমানে চলমান আছে।
মামলার বিষয়ে মোঃ জাকাত আলির নিকট জানতে চাইলে, তাঁর বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই বলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান। পরে মামলার কাগগপত্র দেখালে তিনি মামলার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, মামলার বাদির সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে, খুব শীঘ্রই এটার মিমাংসা হয়ে যাবে।
অপরদিকে, এ মামলার বাদি সুজিত সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলা হলে সুজিত সরকার মিমাংসার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, মোঃ জাকাত আলির সাথে মামলা মিমাংসা বা অন্য কোন কথা-বার্তা হয়নি। মোঃ জাকাত আলি যা বলেছেন তা সত্য নয়। (নড়াইল যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে অনিয়ম দূর্নীতি পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে)