স্টাফ রিপোর্টার
সরকারি গেজেটে ভুল সংশোধন জটিলতা কাটিয়ে শপথ নেয়ার পরও নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাচুড়ী ইউপির ২নং ওয়াডের্র সাধারণ সদস্য মো.ছামিউল শেখকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মেলজার হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও শনিবার (০৫ মার্চ) ছামিউল শেখকে বৈধ সদস্য হিসেবে পরিষদের সকল কার্যক্রমের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে কোনরুপ প্রতিবদ্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করেন। মো.ছামিউল শেখ ইউনিয়নের ডহর চাঁচুড়ী গ্রামের খাজা মিয়া শেখের ছেলে।
অভিযোগে জানা যায়, সদ্য সমাপ্ত চাঁচুড়ী ইউনিয়নের নির্বাচনে ২নং ওয়াডের্র সাধারণ সদস্য পদে বেসরকারিভাবে মো.ছামিউল শেখকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সরকারি গেজেটে ভুলক্রমে তার নাম অন্তর্ভুক্ত না করে নিকটতম পরাজিত প্রার্থী রবিউল ইসলামের নামে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন অফিস। এরপর গত ৬ জানুয়ারি ছামিউল শেখের আবেদনের প্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা বিধি মোতাবেক তাকে বিজয়ী হিসেবে ২৫ জানুয়ারি সরকারি গেজেট প্রকাশ করে। এরপর পরাজিত প্রার্থী রবিউল ইসলাম এনিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলে নানা আইনী জটিল প্রক্রিয়া শেষে বিজয়ী প্রার্থী হিসেবে ইউএনও মো.আরিফুল ইসলাম তাকে ২৪ ফ্রেবুয়ারি নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে শপথ পাঠ করান। কিন্তু এরপরও চেয়ারম্যান মেলজার হোসেন ভূঁইয়া ছামিউল শেখকে পরিষদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা অর্পণে বাধাদানসহ নানাবিধ দুর্বব্যবহার করছেন। এরই ধারবাহিকতায় গত ১ মার্চে বিকাল আনুমানিক ৪.৩০ ঘটিকার সময় চেয়ারম্যান মেলজার হোসেন ভূঁইয়া ওই সদস্যের নির্বাচনী ওয়ার্ডভূক্ত একজন নাগরিকের একটি ওয়ারিশ কায়েম সনদে ইউপি সদস্যদের নির্ধারিত স্থানে ছামিউল শেখ স্বাক্ষর করলে তিনি তার ওপর ক্ষেপে যান। এ সময় চেয়ারম্যান উত্তেজিত কন্ঠে বলেন,‘ তুই এই পরিষদের কোন বৈধ সদস্য নয়। আমি চেয়ারম্যান যা করব,এই পরিষদে তাই হবে। এই মুহুর্তে তুই পরিষদ থেকে বের হয়ে যা।’ এভাবে ওই সদস্যকে লাঞ্চিত করে অপমানজনকভাবে পরিষদ থেকে বের করে দেন। এরপর উপস্থিত লোকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, চাঁচুড়ী ইউপির ২নং ওয়াডের্র বৈধ সদস্য হিসেবে মো.ছামিউল শেখকে পরিষদের কার্যক্রমে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সার্বিক সহায়তাসহ তার সঙ্গে কোনরুপ অসদাচরণ না করার নির্দেশনা দিয়ে চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
জানতে চাইলে চাঁচুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মেলজার হোসেন ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,‘একটি ওয়ারিশ কায়েম সনদে স্বাক্ষর করাকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য মো.ছামিউল শেখের সঙ্গে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়েছে। কাজের ব্যস্ততায় আমি মানসিকভাবে অপ্রস্তুত থাকার কারণে এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে।’