স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বি/ধবা এক গৃহবধূকে বাড়ি থেকে বের করে বাড়ি দ/খল, জো/রপূর্বক ওয়ারেশ সনদ ও বিভিন্ন সন্ত্রা/সী অভিযোগ উঠেছে। ভূক্তভোগি নারী জেসমিন নাহার এ ঘটনায় পুলিশ ও আ’লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে অভিযোগ করেও বাড়ির দখল বুঝে পাননি। এসব অ/পকর্মের প্রতিবাদে শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে সদরের শাহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ বোর্ডের সামনে শাহাবাদ ইউনিয়ন নাগরি সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন এবং সন্ধ্যায় স্থানীয় গারোচোরা বাজারে স্থানীয় আ’লীগ ও মৎসজীবী লীগ তাৎক্ষনিকভাবে এক প্রতিবাদ সভা করে। পৃথক এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া, ভূক্তভোগি নারী জেসমিন নাহার, নড়াইল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জেলা মৎসজীবী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুজ্জামান পলাশ প্রমুখ।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের আলোকদিয়া গ্রামের মোজাহার হোসেন নড়াইল সদর হাসপাতালের পূর্ব পার্শ্বে ৮শতাংশ জায়গার ওপর একটি পাকা ভবন নির্মান করে প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগমকে নিয়ে বসবাস করতেন। ২০০৭ সালে জেসমিন নাহার নামে এক মেয়েকে বিয়ে করলে প্রথম স্ত্রী নাসিমা কন্যা সুমিকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি রাঙ্গমাটি জেলায় স্থায়ীভাবে চলে যায়। দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিনের মৌসুফ আহম্মেদ (১২) নামে এক সন্তান রয়েছে। ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর মোজাহারের মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিনই স্বামীর পাশে ছিলেন।
রোববার (১৩মার্চ) সদরের আলোকদিয়া গ্রামে মোজাহারের স্বামীর পৈত্রিক ভিটায় জেসমিন নাহারের সাথে কথা হলে জানান, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে নাড়াইল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ছেলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক ফলাফল আনতে গেলে হটাৎ করে জানতে পারতে পারেন তার বাড়িতে কে বা কারা তালা লাগিয়ে দিয়েছে। এ সময় আমি বাড়িতে এসে তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করি। পরে বিকেলে আ’লীগ নেতা আলমের নেতৃত্বে ৩০-৪০জন এসে আমাকে এসে মারধর করে আমার ও ছেলের বুকের ওপর অস্ত্র ঠেকিয়ে এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা, ২ভরি স্বর্ণসহ ২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এরপর এ বছরের ১১ জানুয়ারী তারা পূনরায় আমার বাড়িতে এসে বাড়ির বাকি সমস্ত মালামাল লুটপাট এবং জানালা দরজা ভেঙ্গে ফেলে। পরে আমাকে মারধর বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আলমের দাবি তিনি এই বাড়িটি নাকি স্বামীর প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগমের কাছ থেকে ক্রয় করেছেন। এ সমস্ত ঘটনা আমি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পরে নড়াইল জজ আদালতে মামলা করি। মামলাটি এখন সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি এবং আলোকদিয়া গ্রামে স্বামীর পৈত্রিক ভিটায় বসবাস করছি। সন্তানকে স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছি। আমি মাননীয় এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি তার যেন এ ঘটনার সিঠিক বিচার এবং আমার বাড়ি দখলমুক্ত করার ব্যবস্থা করে দেন।
জেলা মৎসজীবী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, একজন গৃহবধূকে এভাবে মা/রধর ও লুটপাট করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া ফৌজদারী অপরাধের সামিল। তাছাড়া আওয়ামী লীগের নামে আলমগীর হোসেনের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে ছাত্রলীগের দু’নেতা-কর্মী মারধর ও লাঞ্চিতের শিকার হয়েছে। এছাড়া সে কিভাবে একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ওয়ারেশ কায়েম সনদ নেন ! তিনি এর সঠিক বিচার দাবি করেন।
এদিকে শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) আমি শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে কাজ করার সময় সরদার আলমগীর হোসেন দলবল নিয়ে আমার অফিসে এসে অ/স্ত্র ঠেকিয়ে প্রথমে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর মৃ/ত মোজাহের হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তান মৌসুফ আহম্মেদকে ওয়ারেশ থেকে নাম বাদ দিয়ে প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগম ও তার কন্যা আসমা সুলতানা সুমিকে ওয়ারেশ হিসেবে দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। আমি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আমার সাথে যে আচরন করা হয়েছে আমি এর উপযুক্ত শাস্তি ও বিচার দাবি করছি এবং জোরপূর্বক স্বাক্ষরকৃত ওয়ারেশ কায়েম সনদপত্র উদ্বারের দাবি করছি। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছি।
এ ব্যাপরে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন বলেন, তৃতীয় পক্ষ শাহাবাদ ইউনিয়নের মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে মোজাহারের প্রথম স্ত্রী নাসিমা বেগমের নামের ৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি। আমি কাওকে মারধর করিনি। ওই তিন শতাংশ জায়গার মধ্যে বাড়ির অংশ পড়েছে। এছাড়া আমি ওয়ারেশ কায়েম সনদপত্রের জন্য শাহবাদ ইউনিয়ন পরিষদে যাইনি বলে জানান।