স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের লোহাগড়ায় ভিজিএফ’এর চাল আত্মসাতের অভিযোগে উপজেলার কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানসহ ৩ জনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। গত বৃহস্পতিবার (১৯মে) সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারি পরিচালক মোহাঃ মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে এই মামলাটি করেছেন। ( মামলা নং-১৫/২০২২)
মামলা সূত্রে জানা গেছে ,২০১৯ সালের ১ আগষ্ট কাশিপুর ইউনিয়নের ২৭৭০ জন ভিজিএফ সুবিধাভোগী দুঃস্থ জনগনের মধ্যে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিতরণের জন্য ৪১.৫৫০ মে.টন চাল সরকারীভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান ৮ আগষ্ট তারিখে বরাদ্দকৃত চালের ডিও গ্রহন করেন এবং গুদাম থেকে ২৪ মে.টন চাল উত্তোলন করে নিয়ে যান। ইউনিয়ন পরিষদে জায়গা না থাকার অযুহাতে বাকি সাড়ে ১৭.৫৫০ টন চাল লোহাগড়া খাদ্য গুদামে রেখে যান। চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান ওই চাল থেকে ৩.৬০০ টন চাল সারুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী শাহাবুর রহমানের কাছে বিক্রি করে দেন। ৯ আগষ্ট বিকালে চেয়ারম্যান, গুদাম কর্মকর্তা কামরান হোসেন ও চাল ব্যবসায়ী শাহাবুর পরস্পর যোগসাজসে বিক্রিত চাল খাদ্য গুদাম থেকে নসিমনে করে নড়াইলের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লোহাগড়া থানা পুলিশ নড়াইল-যশোর সড়কের বসুপটি চায়না প্রজেক্ট এর সামনে থেকে নসিমনসহ ওই চাল আটক করেন। এ সময় নসিমন চালক কামরুল ও রিয়াজ উদ্দিনকে আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক খাদ্য গুদামের লেবার সরদার জগন্নাথ কর্মকার নামে আরো একজনকে আটক করে। আটককৃতদের ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এদিকে পুলিশ এ বিষয়ে থানায় জিডি করে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরে প্রেরন করেন। দুদক কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে কাশিপুর ইউপির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, তৎকালীন খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কামরান হোসেন ও চাল ব্যবসায়ী শাহাবুর রহমানের নামে মামলা রুজু করেন।
মামলার বাদী মোহাঃ মোশাররফ হোসেন জানান, আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা মূল্যের ভিজিএফের ৩.৬ টন চাল দুঃস্থদের মধ্যে বিতরন না করে দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাত করে বিক্রি করার ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দন্ডবিধি ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়েছে ।
কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মামলার বিষয়ে বলেন, গোডাউন থেকে টি আর এর চাল না কি চাল, আর কে তা কিনেছে তার ঠিক নাই। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এই চাল আমার নামে বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল না । এটা আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা।