স্টাফ রিপোর্টার
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়ায় মন্দির, বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন নড়াইল জেলা জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ। শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকালে এসব এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে কথা বলেন।
নড়াইল জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এ্যাডভোকেট খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজের নেতৃত্বে পরিদর্শন দলে ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাদিউজ্জামান, জেলা জাতীয় শ্রমিক পার্টির সভাপতি শাফায়েত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তাহাজ্জত হোসেন, জেলা জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি কাজী শহিদুল ইসলা, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুক্ত, জেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার ইমন, লোহাগড়া উপজেলা জাপা নেতা মোঃ সাদেক, শফিকুল ইসলাম, বেলাল হোসেন সহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
জাপা নেতারা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছিলো তা অনেকাংশে নষ্ট হয়েছে। এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুনঃরুদ্ধার করার জন্য এই সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে। আমরা প্রত্যশা করবো সরদার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করবে। আর সরকার যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে না পারে, এই দেশটি ক্রমান্বয়ে এই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় এবং একে অপরের প্রতি হানাহানি, রেশারেশিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সংকট ঘনিভূত হবে এবং দেশে চরম বিশৃংখলা দেখা দিবে। সুতরাং সরকার ও প্রশাসনের উচিত এ ঘটনায় যে লিখেছে এবং যারা হামলা করেছে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা। তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টির মাননীয় চেয়ারম্যান জিএম কাদের আমাদেরকে এখানে পাঠিয়েছে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য। জাতীয় পার্টি ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে এসে দাড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
উল্লেখ্য যে, গত ১৫ জুলাই লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া সাহাপাড়ার কলেজছাত্র আকাশ সাহার ফেসবুকে মহানবী (সাঃ)কে নিয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বিক্ষুদ্ধ লোকজন আকাশ সাহার গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে তাদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন। ওইদিন সন্ধ্যার পর বিক্ষুদ্ধ লোকজন সাহাপাড়ার পাঁচটি বাড়ি ও দিঘলিয়া বাজারের ছয়টি দোকান ভাংচুর করেন। এর মধ্যে গোবিন্দ সাহার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া সাহাপাড়ার মন্দিরের চেয়ার ও সাউন্ডবক্স এবং আখড়াবাড়ি মন্দিরের টিনের চালা ভাংচুর ও মহাশ্মশান কালিবাড়ি মন্দির সামান্য ক্ষতি করে বিক্ষুদ্ধরা।
এদিকে গত ১৭ জুলাই নড়াইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুুল আলমের আদালতে আকাশ সাহার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে মহানবীকে (সাঃ) কটূক্তি করে মন্তব্য করেছে মর্মে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে আকাশ সাহা।
অন্যদিকে, সাহাপাড়ার বাড়িঘর ও দোকান ভাংচুর এবং মন্দিরে হামলার ঘটনায় ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত ১০জনের মধ্যে চারজনকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এলাকার পরিবেশ বর্তমানে শান্ত। সবাই বাড়িঘরে ফিরে এসেছে এবং জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।