স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে একমাত্র পুরাতন ভবনের রোগী, প্যাথলজি ও দাফতরিক কাজে ব্যবহৃত কক্ষগুলো থেকে মালামাল ও কর্মচারিদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রোগীদের ঠাঁই হয়েছে অপারেশান থিয়েটার ভবনের বারান্দার মেঝেতে। অপরদিকে দাফতরিক কাজের মালামাল গুলোর চিকিৎসকদের আবাসিক ভবনে উঠানো হয়েছে। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে ।
জানা যায়, চার লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র সরকারি চিকিৎসা সেবা দানকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনটি যে কোন সময় ভেঙে পড়ে প্রাণহানী ঘটতে পারে বলে শংকিত হয়ে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। তাই ভবনের দ্বোতলায় থাকা ওয়াডের্র ৩০ জন রোগীসহ দাফতরিক মালামাল স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রায় চার বছর আগে পরিত্যাক্ত ঘোষিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনটির দেওয়াল ও পিলার গুলোতে ফাঁটল ধরে খষে পড়তে শুরু করেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান অফিস সুত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭৮ সালে ৫ একর জমির ওপর ৩১ শয্যার বিশিষ্ট হাসপাতালটি স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালে নির্মিত হয় দ্বিতল এ ভবনটি। পরবর্তী ২০০৯ এটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। পুরাতন এ ভবনটি ইতোমধ্যে কয়েকবার মেরামতও করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গত প্রায় ৪ বছর আগে থেকে ভবনের নীচ তলা কয়েকটি জায়গায় ফাঁটল দেখা দিলে বিভাগীয় প্রকৌশলীরা সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সেটিকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেন। এরপর গত প্রায় ৩ বছর আগে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যশোরের প্রকৌশলীরা পরিদর্শনের পর ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একধিকবার জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র দাবি করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কমপ্লেক্সের এ ভবনের পিলারসহ দেওয়ালের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট ফাঁটল থেকে ইট, কোয়া,পলেস্তারা ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। দ্বোতলার সিঁড়ির সামনের পিলারটিসহ অনেক স্থানেই ফাঁটল ধরা অংশ থেকে ভেঙে পড়ছে। ভেঙে পড়ছে ছাঁদের বড় বড় অংশ। যে কোন সময় ভবনটি ধ্বসে দূর্ঘটনার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কর্মকর্তা কর্মচারিসহ রোগীদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দ্বোতলায় থাকা ৩০ টি বেডের রোগীদের স্থানান্তর করে পাশের ভবনের বারান্দায় নেয়া হয়েছে। সেখানে রোদ-বৃষ্টিতে রোগীদের দূর্ভোগের পাশাপাশি চিকিৎসক ও সেবিকারা বেকায়দায় পড়েছেন। দাফতরিক মালামালসহ চিকিৎসকদের আবাসিক ভবনে কর্মচারিদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
উপজেলার বাকা গ্রাম থেকে আসা রোগী হুমায়ুন কবির বলেন,‘ভবনটির মধ্যদিয়ে চলা ফেরায় জীবনের ঝুঁকি থাকলেও উপায়হীন হয়েই তাদের চলাচল করতে হচ্ছে। স্বজনদের চিকিৎসার জন্য এক প্রকার বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন গ্রামের অসহায় মানুষ।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা.কাজল মল্লিক বলেন, ‘ভবনটি দীর্ঘদিন আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কর্মরত চিকিৎসক, নার্স,কর্মচারি, রোগী ও তাদের স্বজনদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাফেরা করতে হচ্ছে।’
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর আগেই ভবনটি অপসারণসহ নতুন ভবন নিমার্ণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।’