স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলে ৫লাখ টাকা যৌ/তুকের দাবিতে স্ত্রীকে অমানবিক নি/র্যাতনের অভিযোগে স্বামী রাসু মোল্যার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন অসহায় প্রতিবন্ধী ইয়াসমিন বেগমের মেয়ে মোসা: রেহেনা খানম (২৬)।মামলা দায়েরের পর স্বামী ও স্বামীর স্বজনদের হু/মকি ধামকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন রেহেনা খানম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে,নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল গ্রামের প্রতিবন্ধী ইয়াসমিন বেগমের মেয়ে রেহেনা খানমের সঙ্গে ২০১৮ সালের ২৩মার্চ গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার পালেরপাড়ার বাসিন্দা নুরনবীর বাড়ির ভাড়াটিয়া রাসু মোল্লার বিবাহ হয়। বিবাহের সময় রেহেনার নানা নগদ ৫০হাজার টাকা, ২ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও অসবাবপত্রসহ দু’লক্ষাধিক টাকার মালামাল দেন।বিবাহের কিছুদিন পর থেকে রাসু মোল্লা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রেহেনাকে মা/রপিট শুরু করে এবং গলা চেপে ধরে হ/ত্যা চেষ্টা চালায়। প্রতিবন্ধী মায়ের পক্ষে যৌতুক দেয়া কোনভাবে সম্ভব নয় বলে স্বামী রাসুর কাছে আকুতি মিনতি জানায় রেহেনা। অসহায় রেহেনার কোন কথাই মন গলাতে পারেনি যৌ;তুকলোভী স্বামী রাসু মোল্লার। ৫লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর কোটাকোলে বেড়াতে এসে রেহেনাকে শারী/রিক মা/রপিট ও মান/ষিক নির্যা/তন করে স্বামী রাসু মোল্লা। স্বামীর মা/রপিটে আহত রেহেনা লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।
ঘটনা উল্লেখ করে গত ২০ সেপ্টেম্বর স্বামী রাসু মোল্লাসহ ৩জনের নামে নড়াইল নারী ও শিশু নির্যা/তন দ/মন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের হয়।মামলাটি তদন্তের জন্য বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সানা মো: মাহরুফ হোসাইন লোহাগড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। স্বাক্ষী ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তির বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ঘটনাটি সত্য বলে প্রমাণীত হয় মর্মে লোহাগড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোছা: শিরিনা খাতুন গত ৭ নভেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এ মামলায় বিচারক গত ১০ নভেম্বর আসামি রাসুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।এর আগে গত ৩০ মে যৌতুক নিরোধ আইনে লোহাগড়া আমলী আদালতে রাসু মোল্লাকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়।
এ ছাড়া গত ১০ নভেম্বর দেনমোহর ও খোরপোষ আদায়ে স্বামী রাসু মোল্লাকে বিবাদী করে লোহাগড়া পারিবারিক জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন অসহায় স্ত্রী রেহেনা খানম। আদালতে রাসু মোল্লার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাকে ভিন্নখাতে নিতে সংবাদ সম্মেলন করে উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করেছেন রেহেনার স্বামী রাসু।রাসু মোল্লার কাছে রেহেনা ও তার স্বজনরা ১০লাখ টাকার যৌতুক দাবি করেছে এবং রাসুর বসত ঘর থেকে গত ১৪ জুন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাড়ে ৭লাখ টাকা চুরি করে নিয়েছে মর্মে উল্লেখ করে গাজীপুর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি মামলা (সি/আর মামলা নং-৭৫৯/২২ ও সি/আর মামলা নং-৭৯২/২২) করেন তিনি (রাসু)।বিচারক মামলা দুটি তদন্তের জন্য বাসন থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা বাসন থানার উপ-পরিদর্শক মো: মতিউজ্জামান মামলা দুটির বাদী রাসু মোল্লার স্বাক্ষীসহ নিরপেক্ষ স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ পূর্বক মামলা দুটির কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি উল্লেখপূর্বক গত ২১ অক্টোবর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করেছেন।
এদিকে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পক্ষে না যাওয়ায় উপয়ান্তহীন হয়ে স্ত্রী রেহেনার চরিত্রকে কলংক করতে রেহেনার খালাতো বোনের স্বামী সরকারি কর্মচারি মানসুরকে জড়িয়ে নানা ধরনের কুৎসা ও অপপ্রচার রটিয়ে বেড়াচ্ছে রাসু মোল্লা।রেহেনা জানান,আমার ভগ্নিপতি মানসুর মামলার তদবির করার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে যৌতুকলোভী স্বামী মিথ্যা ,ভিত্তিহীন ও মনগড়া অপপ্রচার চালাচ্ছে।নির্যাতনের শিকার রেহেনা যৌতুকলোভী স্বামী রাসু মোল্লার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।